রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়

এ অপসংস্কৃতির অবসান কাম্য

দেশের উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় নৈরাজ্য চলছে দীর্ঘদিন ধরে। যাকে তামাশা বলে অভিহিত করলেও হয়তো খুব একটা ভুল হবে না। কতটা দায়দায়িত্বহীন অবস্থা বিরাজ করলে দেশের ছয়টি পাবলিক ও ৩১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ শূন্য থাকতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কর্তাব্যক্তি, তিনিই প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দেন সামনে থেকে। মর্যাদাবান এ পদে যারা অধিষ্ঠিত হন তাদের নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য যিনি একই সঙ্গে দেশের রাষ্ট্রপতিও। উপাচার্য যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, তেমন প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও তার অবস্থান সবার ওপরে। অথচ দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ শূন্য থাকে মাসের পর মাস। শূন্য থাকে সহউপাচার্যের পদ আরও বড় অঙ্কে। কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকে বিরাট সংখ্যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব অন্য কেউ পালন করলেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্বে বিকল্প না থাকায় যাচ্ছেতাই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি। এজন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া কিছুটা সময়সাপেক্ষও। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম করার মতলবেই মাসের পর মাস বছরের পর বছর উপাচার্য নিয়োগ দেয় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। যেসব ট্রাস্টি বোর্ডে অনিয়মের প্রবণতা রয়েছে উপাচার্য নিয়োগে তাদের অনীহা থাকে। কারণ উপাচার্য নিয়োগ না দিলে তাদের অনিয়ম করতে সুবিধা হয়। ট্রাস্টি বোর্ডের লক্ষ্য থাকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নেওয়ার দিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকমতো পরিচালনার দিকে নয়। এ নৈরাজ্য বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে কঠোর হতে হবে। উপাচার্য ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর অপসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে।

সর্বশেষ খবর