সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা

গণতন্ত্র ও সুশাসনেও নজর দিতে হবে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হাতছানি দিচ্ছে জাতির সামনে। একই সঙ্গে মূল্যায়নের সময় এসেছে কতটুকু এগিয়েছি আমরা ফেলে আসা ৫০ বছরে। সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে এ আত্মজিজ্ঞাসার ইতিবাচক নেতিবাচক দুই ধরনের জবাব থাকলেও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে দৃষ্টিকাড়া সাফল্য দেখিয়েছে তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। বলা হয়ে থাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে দখলদার পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিরা জয়ী হলেও বাংলাদেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। চরম সে দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধু দেশ পুনর্গঠনে নামেন শূন্য হাতে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং আত্মমর্যাদার প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন। যে কারণে তাঁকে প্রাণ দিতে হয় বিদেশি শক্তির এজেন্টদের হাতে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পশ্চিমা কূটনীতিকরাই এদেশের শাসকদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত সে দুর্ভাগ্য নিয়তির লিখন বলে বিবেচিত হয়েছে। এর মাত্র ১১ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ বিশ্বে আবির্ভূত হয়েছে একটি মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে। স্বল্পোন্নত দেশের লজ্জা কাটিয়ে বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হয়েছে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বড় ২৫টি অর্থনীতির দেশের একটি হবে। তখন বাংলাদেশ হবে ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বর্তমানে অবস্থান ৪১তম। ২০৩৩ সালে আমাদের পেছনে থাকবে মালয়েশিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ। আগামী ১৫ বছর দেশের মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি গড়ে ৭ শতাংশ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য এসব মূল্যায়ন গর্বের। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার জন্য তা একটি সুখবর। তবে আর্থিক অগ্রগতির পাশাপাশি সুশাসন ও গণতন্ত্রের ক্ষেত্রেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায়  গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর