রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

সচেতনতার বিকল্প নেই

সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবর প্রকাশ হয়। শুক্রবার রাজশাহীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মাইক্রোবাসে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চার পরিবারের ১৭ সদস্য রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে পিকনিক করতে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় সবাই দগ্ধ হয়ে মারা যান। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা অনুযায়ী দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, লাইসেন্সহীন চালক ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেই। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সমস্যা, জরুরি ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনাহীনতাও দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে দায়ী। সড়ক দুর্ঘটনায় নিয়মিত মানুষের মৃত্যু যেন অলঙ্ঘনীয় নিয়তি। বছর যায়, দশক যায় কিন্তু সড়কে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনায় সত্যিই কিছু করা হয় না। গাড়ির লাইসেন্স ও চালকের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়াও দুর্নীতিগ্রস্ত। মোটর ভেহিকেল অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ অনুযায়ী একজন চালকের লাইসেন্স দেওয়ার আগে তার ৩৫ মিনিটের মহাসড়কে গাড়ি চালানো ও তাত্ত্বিক পরীক্ষা নিতে হয়। এর জন্য সরকারের লোকবল খুবই কম। বিআরটিএর হাতে এককভাবে সব দায়িত্ব কেন্দ্রীভূত। পরিবহনশ্রমিকদের ওপর মালিকদের সব চাহিদাই অতিরিক্ত। অতিরিক্ত সময় ধরে গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, ফিটনেস না থাকা গাড়ি চালানোর ফল হলো দুর্ঘটনা। সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে যে এটা একটা গুরুতর জাতীয় সমস্যা। সরকারের পাশাপাশি পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সচেষ্ট হতে হবে, যাত্রীসাধারণের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর