শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

একাত্তরের অপরাধ

পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত

পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পন্ডিত হুসেইন হাক্কানি একাত্তর সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। পাকিস্তানের তিনটি সরকারের উপদেষ্টা পদে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই কূটনীতিক ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতেরও দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর অবৈধ ভূমিকা ও সামরিক বাহিনী ও মোল্লাতন্ত্রের অশুভ জোটের তীব্র সমালোচক হিসেবে ভাবা হয় হুসেইন হাক্কানিকে। তিনি ‘পাকিস্তান বিটুইন মস্ক অ্যান্ড মিলিটারি’ নামের একটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত বইয়েরও প্রণেতা। হাক্কানি তাঁর ওই বইতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অবৈধ তৎপরতা সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। ২৯ মার্চ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেছেন, ১৯৭১ সালে সংঘটিত সব নৃশংসতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনার বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা উচিত। ক্ষমাপ্রার্থনাই হবে পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে সৌজন্যমূলক বিষয়। ওয়াশিংটনের শীর্ষস্থানীয় থিঙ্কট্যাঙ্ক হার্ডসন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক হাক্কানি বঙ্গবন্ধুকে শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিই নয়, বিশ্ব ইতিহাসের একজন মহান নেতা হিসেবেও অভিহিত করেছেন। বলেছেন তাঁর অবস্থান মহাত্মা গান্ধী ও নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বিশ্বনেতাদের কাতারে। পাকিস্তানের একজন শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক হাক্কানি বাংলাদেশের জনগণের কাছে তাঁর দেশের ক্ষমাপ্রার্থনার যে তাগিদ দিয়েছেন তাতে বাংলাদেশের এ-সংক্রান্ত দাবির যৌক্তিকতাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রমাণিত হয়েছে মোল্লা ও মিলিটারিদের অশুভ যোগসাজশে পাকিস্তান ইতিমধ্যে জাহান্নামে পরিণত হলেও সেখানে এখনো সত্য বলার মতো লোক রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে ইসলামাবাদের উচিত ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে তারা যে মনুষ্যসত্তা একেবারে বিসর্জন দেয়নি তা প্রমাণ করা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর