বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে মহানবীর ভাষণ

মুফতি মুহাম্মদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী

মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে মহানবীর ভাষণ

আলহামদুলিল্লাহ!

করোনাভাইরাসের এ মহামারীতে মাহে রমজান সমাগত। এ মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতে পরিপূর্ণ। মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম (রোজা) ফরজ করা হয়েছে। যেমনভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যাতে তোমরা মুত্তাকি (আল্লাহভীরু হতে পার)।’ সুরা বাকারা আয়াত ১৮৩। সমাগত মাসের প্রস্তুতি সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জগদ্বাসীর উদ্দেশে এক ঐতিহাসিক ভাষণে দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। যা আমাদের সবার জানা প্রয়োজন। হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘একবার শাবান মাসের শেষ দিন রসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দান করলেন। তিনি বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের ওপর এক মহান ও কল্যাণময় মাস ছায়া বিস্তার করেছে। এটা এমন মাস যাতে এমন একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। আল্লাহতায়ালা (তোমাদের জন্য) এ মাসের রোজাকে ফরজ আর রাতে নামাজ পড়াকে নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর নৈকট্য চেয়ে একটি নেক কাজ করবে সে ওই ব্যক্তির সমান হবে যে অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করেছে। এটা ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্য এমন এক গুণ যার প্রতিদান (সওয়াব) হলো জান্নাত। এটা পারস্পরিক সহানুভূতির মাস। এটা ওই মাস যাতে মোমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ মাসে যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে এটা তার পক্ষে তার গুনাহসমূহের জন্য ক্ষমাস্বরূপ হবে এবং তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির কারণ হবে। আর তাকে রোজাদারের সমান সওয়াব দান করা হবে এতে তার সওয়াব  থেকে কিছুই কমানো হবে না। (হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন) আমরা বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি এমন সামর্থ্য রাখে না যা দ্বারা রোজাদারকে ইফতার করাতে পারে। তখন তিনি বললেন, আল্লাহতায়ালা এ সওয়াব ওই ব্যক্তিকেও দান করেন যে কোনো রোজাদারকে এক ঢোক দুধ দ্বারা, একটি খেজুর দ্বারা অথবা এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করায়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পরিতৃপ্তির সঙ্গে ভোজন করায় আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউসে কাওসার থেকে পানীয় পান করাবেন। ফলে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। এটা এমন একটি মাস যার প্রথম অংশ রহমত, মধ্যম অংশ ক্ষমা এবং শেষ অংশ জাহান্নাম থেকে মুক্তির। যে ব্যক্তি এ মাসে নিজের দাস-দাসীদের কর্মভার হালকা করে দেবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।’ বায়হাকি, মিশকাতুল মাসাবিহ, কিতাবুস সাওম।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে আগত রমজানে বেশি বেশি নেক আমলের তৌফিক দান করুন।

লেখক : প্রিন্সিপাল, মণিপুর বাইতুর রওশন মাদরাসা কমপ্লেক্স

মিরপুর, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর