বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
বিচিত্রতা

অজগর

অজগর

অজগর নির্বিষ সাপ। এর নয়টি প্রজাতি। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, নিউগিনি ও অস্ট্রেলিয়ায় অজগর রয়েছে। অজগর প্রকান্ড আকৃতির সাপ। এদের দেহের ব্যাস তুলনামূলকভাবে দৈর্ঘ্যরে দিক থেকে অন্য যে কোনো সাপের তুলনায় বেশি। আঁশ মসৃণ। অজগরের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী, কিন্তু কোনো বিষদাঁত নেই। গ্রীবা স্পষ্ট, মস্তক প্রশস্ত, তুন্দ দীর্ঘ।

অধিকাংশ অজগর কিছুটা বৃক্ষবাসী। বনে-জঙ্গলে এদের পাওয়া যায়। তবে নদী, হাওর কিংবা ঝিলের কাছে এদের বেশি দেখা যায়। পানিতে এরা স্থিরভাবে থাকে, প্রয়োজনে দক্ষতার সঙ্গে সাঁতারও কাটতে পারে। তবে অজগর সাধারণত পানির কিনারায় তুন্দ বাইরে রেখে আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে ডুবে থাকে। অভিধানে অজ-এর অন্যতম অর্থ ছাগল বা মেষ। সম্ভবত ছাগল অথবা ছাগলের মতো অন্য প্রাণী শিকার করে খায় বলেই স্থানীয়ভাবে এ বিশাল আকৃতির সাপের নাম দেওয়া হয়েছে অজগর।

বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি ময়াল সাপ, অন্যটি গোলবাহার। এর মধ্যে বড় ময়াল সাপ। এরা ৫.৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মিশ্র-চিরহরিৎ বন ও গরান বনাঞ্চলে এদের পাওয়া যায়। বাংলাদেশে দুটি প্রজাতিই বিরল। দেশে উভয়কে বিপন্ন অথবা অতিবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অজগর স্তন্যপায়ী, পাখি ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী নির্বিচারে খায়। তবে স্তন্যপায়ী প্রাণী বেশি পছন্দ। স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে ইঁদুর, খরগোশ, ছাগল, ভেড়া, শিয়াল, হরিণ শিকার করে। খাওয়ার আগে অজগর তার শিকার পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলে।

অজগরের প্রজনন সময় শুরু হয় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। যৌনমিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুন্ডলী পাকিয়ে ‘তা’ দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে মা তাদের পরিচর্যা করে না। অজগরের চামড়ার বাণিজ্যিক মূল্য খুব বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর