মড়ার উপর খাঁড়ার ঘার মতোই কঠিন আঘাতের শিকার দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ। করোনার প্রথম আঘাতে যার যা সম্বল ছিল প্রায় সব শেষ হয়ে যায়। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠতেই চলছিল যে যার মতো কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর শুধু গরিব ও নিম্নবিত্ত নয়, নিম্নমধ্যবিত্তরাও বিপাকে পড়েছে। সবচেয়ে সংকটে পড়েছে দিন আনে দিন খায় স্তরের মানুষ। করোনার দ্বিতীয় আঘাতে অনাহার-অর্ধাহারের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে। গত এক যুগে দারিদ্র্য বিমোচনের যে সাফল্য অর্জিত হয়েছিল তা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে করোনা মহামারী। আশার কথা দেশের গরিব-দুঃখী অসহায় মানুষের এ বিপদের দিনে করোনার প্রথম আঘাতের মতো দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার ৫ হাজার এবং অন্য পেশার প্রায় ৩৫ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে উপকারভোগীদের হাতে এসব অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। করোনা ও সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করছে সরকার। কৃষকের পাশাপাশি সরকারের অর্থ বিভাগে সংরক্ষিত ডাটাবেজ অনুযায়ী বিভিন্ন পেশায় ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ১৪ এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর, কৃষক, শ্রমিক, গৃহকর্মী, মোটরশ্রমিকসহ অন্য পেশায় নিয়োজিত ৩৬ লাখ উপকারভোগী পরিবারকে আর্থিক সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। স্বীকার করতেই হবে, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। একই সঙ্গে ভাবতে হবে পরপর দুই বছর করোনা-আঘাতে অর্থনীতি যেভাবে মার খেয়েছে সে পরিস্থিতিতে ৩৬ লাখ পরিবারের জন্য সহায়তা কম কথা নয়। এ সহায়তা তাদের টিকে থাকতে সাহস ও শক্তি জোগাবে আমরা এমন আশাই করতে চাই। পাশাপাশি দুস্থদের পাশে সমাজের অবস্থাপন্নদেরও হাত বাড়ানো উচিত।