মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

লর্ড অকল্যান্ড

লর্ড অকল্যান্ড ১৮৩৬ থেকে ১৮৪২ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন। ১৭৮৪ সালের ২৫ আগস্ট কেন্টের বেকেনহামে অকল্যান্ডের জন্ম। তিনি ইটন ও অক্সফোর্ডের ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষা লাভ করেন। গভর্নর জেনারেল হিসেবে অকল্যান্ড বেন্টিঙ্কের অভ্যন্তরীণ নীতি অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং তাতে কিছুটা সফলও হয়েছিলেন। শিক্ষা বিস্তার ও ভারতীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচলন এবং সেচনীতির উন্নয়নে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কোম্পানির পরিচালকদের নির্দেশে তিনি তীর্থকর রহিত ও ধর্মীয় স্থাপনাসমূহের ওপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করেন। তবে উত্তর ভারতের ১৮৩৮ সালের ধ্বংসাত্মক দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। দেশি রাজ্যগুলোর প্রতি অকল্যান্ডের ভূমিকা প্রশ্নাতীত ছিল না। কোম্পানির বিরুদ্ধে পর্তুগিজদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগে তিনি সাতারার রাজাকে অপসারণ করে তাঁর ভাইকে ক্ষমতায় বসান। কোম্পানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কারনালের নবাবকে অপসারণ করে রাজ্যটি ব্রিটিশ-ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেন। ১৮৩৭ সালে অযোধ্যার এক বিদ্রোহ দমন করে তিনি নতুন নবাব নাসিরুদ্দিন হায়দারকে অতিরিক্ত কর প্রদানের শর্তসংবলিত একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন। কোম্পানির পরিচালকরা এ চুক্তি বাতিল করে দেন, কিন্তু তিনি তা নবাবকে জানাননি। তবে অকল্যান্ডের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আফগান সমস্যা। অবশ্য প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে (১৮৩৮-১৮৪২) ইংরেজরা তেমন কোনো সাফল্য পাননি। রাশিয়াপন্থি দোস্ত মুহম্মদ খানকে (১৮২৩ সালে তিনি আফগানিস্তানের আমির হন) সরিয়ে তিনি আফগানিস্থানের আমির পদে ব্রিটিশপন্থি শাহ সুজাকে বসিয়েছিলেন। ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ সিন্ধুর আমিরদের সঙ্গে সদ্য স্বাক্ষরিত চুক্তিতে অকারণে ফাটল ধরায়। যুদ্ধ পরিচালনা করা হয়েছিল আনাড়ির মতো এবং শেষ হয়েছিল ব্রিটিশদের জন্য ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে। লর্ড অকল্যান্ডকে ইংল্যান্ডে ডেকে পাঠানো হলে ১৮৪২ সালের ১২ মার্চ তিনি দেশে ফিরে যান। অকল্যান্ডকে আর্ল ও নরউডের ব্যারন ইডেন উপাধিতে ভূষিত করা হয়। অকল্যান্ডের মৃত্যু হয় ১৮৪৯ সালের ১ জানুয়ারি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর