বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি চাই না

লুটেরাদের আইনের আওতায় আনুন

স্বাস্থ্য পরিচর্যা বা চিকিৎসা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে মানুষের সুস্থ-অসুস্থ থাকা তথা বাঁচা-মরার প্রশ্নও জড়িত। এ খাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম মানেই মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার নামান্তর। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতকে সর্বাধিক অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে এ দেশের জন্মের পর থেকেই। আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামীরা দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর সুরক্ষার বিষয়ে ছিলেন অঙ্গীকারবদ্ধ। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার মতো মানবাধিকার যাতে রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীন স্বদেশে অগ্রাধিকার পায় সে ব্যাপারে তাঁদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতিই ছিল না। বাংলাদেশের সংবিধানেও এসব মৌলিক মানবাধিকার স্বীকার করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর যে সরকারই যখন এসেছে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তৎপর হয়েছে। এ ব্যাপারে বিনিয়োগ করা হয়েছে দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকার এক বড় অংশ। তবে সে অর্থের কত অংশ দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবদান রেখেছে আর কত অংশ আরব্য উপন্যাসের থিফ অব বাগদাদের এ দেশীয় সহচরদের পকেটে গেছে সে বিষয়টি বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। স্বাস্থ্য খাতে কতটা পুকুরচুরি ঘটছে তার স্পষ্ট একটি চিত্র ফুটে উঠেছে খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা বিভাগের রিপোর্টে। ঢাকায় করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত হিসেবে বিবেচিত নয়টি হাসপাতালে কেনাকাটায় অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯৫ খাতের কেনাকাটায় ৩৭৫ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কয়েক গুণ বেশি দামে ওষুধ-সরঞ্জাম কেনা, ৩৫০ টাকার কম্বল ২ হাজার ৪১৮ টাকায় কেনা, ওষুধ-সরঞ্জাম বুঝে না পেয়েই বিল পরিশোধ, একই মালিকানার তিন প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশ নেওয়ার জন্য বাছাই করা এবং প্রয়োজন ছাড়াও কেনাকাটা করা ইত্যাদি। নিরপেক্ষ কোনো সংস্থার দ্বারা তদন্ত হলে লুটপাটের আর্থিক অঙ্ক যে আরও বৃদ্ধি পেত সহজেই অনুমেয়। করোনাকালে যারা স্বাস্থ্য খাতে লুটপাটের মচ্ছব চালিয়েছে তারা চেহারায় মানুষ হলেও আচরণে বরাহের চেয়েও নোংরা। এ লুটেরাদের আইনের আওতায় আনা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর