১৭ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১ কোটি লোক বিদেশে আয়-রোজগার করছেন এবং তাঁরা প্রতি বছর বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখছেন। তাঁদের পাঠানো অর্থ শুধু সংশ্লিষ্ট পরিবারের কল্যাণেই ব্যয় হচ্ছে না, জাতীয় উন্নয়নেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এটি নিঃসন্দেহে আনন্দের কথা। করোনা মহামারীতে রপ্তানি আয় বাড়াতে বিশেষ কৌশল গ্রহণ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনগুলো সেই কৌশল কাজে লাগাতে পারেনি। মহামারীর কারণে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ৬১টি মিশনের মধ্যে ৩৩টি মিশনই রপ্তানি টার্গেট অর্জন করতে পারেনি। বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ১৯টি বাণিজ্যিক উইংয়ের মধ্যে ১৩টি লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ প্রান্তিকে মিশনভিত্তিক রপ্তানি আয়ের এই চিত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো। তাদের তথ্য অনুযায়ী রপ্তানি টার্গেট পূরণে ব্যর্থ মিশনগুলোর মধ্যে ১০টির রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হলেও গত অর্থবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। তবে ২১টি মিশন টার্গেট এবং গত অর্থবছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন উভয় দিক থেকেই পিছিয়ে আছে। চলতি অর্থবছরে ৪১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ায় ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ পুনরায় লকডাউন কার্যক্রম শুরু করেছে। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান গন্তব্য পশ্চিমা দেশগুলোর চাহিদাও কমেছে। এ অবস্থার মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশীয় পণ্যের মানোন্নয়নে প্রকল্পও গ্রহণ করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে ৬১টি মিশন থেকে মোট ২৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে। এটি জাতীয় রপ্তানি আয়ের ৯৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ভারতের নয়াদিল্লি ও চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত মিশনও রপ্তানি টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। রপ্তানির জন্য নতুন খাত চিহ্নিত করার পাশাপাশি বহিঃবিশ্বে আন্তসম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে।