বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

গরিবের অন্তর্জ্বালাবোঝে কতজনে?

এ কে এম শামসুদ্দিন

গরিবের অন্তর্জ্বালাবোঝে কতজনে?

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ধরে যে লাগামছাড়া দুর্নীতি চলছে তা রোধে কোনো আন্তরিক প্রচেষ্টা চলছে কি না এ নিয়ে সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা। মাঝেমধ্যে স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে যে সংবাদ হয় তাতে মানুষের হতাশাই বৃদ্ধি পায়। গ্রাম্য একটি প্রবাদ আছে, ‘যখন আগায় পচন ধরে তখন সেবা-শুশ্রুষা করে ভালো করা যায়, কিন্তু যখন গোড়ায় পচন ধরে তখন কোনো উপায় থাকে না, হাজার কবিরাজেও তখন শেষ রক্ষা করতে পারেন না’। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার হয়েছে তেমন দশা। গত বছর মার্চে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার যে দৈন্যদশা লোকচক্ষুর সামনে উন্মোচিত হয়েছে তা রীতিমতো আতঙ্কজনক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তখন স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নাড়াচড়া পড়তেই দুর্নীতির যে দুর্গন্ধ বেরিয়ে এসেছিল সে অসহনীয় গন্ধ যেন আজও তীব্রভাবে নাকে বাজে। গত এক সপ্তাহে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে যে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে তাতে চোখ বোলালে সে গন্ধের আঁচ পাওয়া যায়। এর মধ্যে গুটিকয় শিরোনাম হলো, ‘করোনার ৯ হাসপাতালে ৩৭৫ কোটি টাকার দুর্নীতি’, ‘স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় অনিয়ম : করোনা তহবিল থেকে পরিশোধ হচ্ছে বিল’, এবং ‘স্বাস্থ্যে ১৮০০ জনকে নিয়োগে অনিয়ম’ ইত্যাদি। এসব অনিয়ম পর্যালোচনা করে বোঝা যায় দুর্নীতির শিকড় কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। করোনার এ মহাসংকটকালেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কর্তাব্যক্তিদের দুর্নীতির লাগাম যখন টেনে ধরে রাখা যাচ্ছে না, তখন গ্রাম্য আরও একটি বচনের কথা মনে পড়ে যায়, ‘বেড়ায় যখন শস্য খায় তখন পাহারা দেবে কে?’

অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, করোনার করাল গ্রাসে দেশের মানুষ যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন স্বাস্থ্য খাতে জড়িত কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি বিপর্যস্ত এসব মানুষকে জিম্মি করে গরিবের অর্থ লুটেপুটে খাচ্ছে। ঢাকার করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত বিবেচিত নয়টি হাসপাতালের কেনাকাটায় দুর্নীতির নোংড়া চিত্র তুলে ধরেছে খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত নিরীক্ষা বিভাগ। এ হাসপাতালগুলোর ৯৫টি খাতে কেনাকাটায় ৩৭৫ কোটি টাকার নজিরবিহীন অনিয়ম পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব কেনাকাটায় প্রযোজ্য যথাযথ ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়া হয়নি, সরবরাহকারীদের সঙ্গে কোনো সরবরাহ চুক্তিও করা হয়নি। একই মালিকের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণে বাছাই করা হয়েছে। পণ্য তালিকায় নির্ধারিত একক মূল্য ও মোট মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। ফলে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দামে ওষুধ-সরঞ্জাম কেনা হয়েছে, যেমন ৩৫০ টাকার কম্বল ২ হাজার ৪১৮ টাকায় কেনা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জামানতের টাকা না নিয়েই কার্যাদেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওষুধ-সরঞ্জাম বুঝে না পেয়েই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। যেমন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ব্যয়বহুল এক্স-রে মেশিন বুঝে না নিয়েই ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘মাছের তেলে মাছ ভাজা’। সরকারের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে বিনা পুঁজিতে বাণিজ্য করা! ব্যবহার-অযোগ্য পণ্য কেনা হয়েছে ইত্যাদি। এখানেই শেষ নয়, সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএলকে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে উৎপাদন বন্ধ রেখে চিহ্নিত ব্যক্তিমালিকানাধীন ওষুধ কোম্পানিকে উচ্চমূল্যে সরকারি হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম মূল্যে উৎপাদিত হলেও ওই প্রতিষ্ঠান থেকে না কিনে সমাজের মুখচেনা মালিকের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে চিকিৎসামগ্রী কিনে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতি করা হয়েছে। গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য খাতে ওষুধ ও স্বাস্থ্যসামগ্রী কেনায় যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে সে তালিকা বলে শেষ করা যাবে না। দেশের স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনার নিয়মকানুন তোয়াক্কা না করে সমাজের অতিপরিচিত ও বহুল সমালোচিত কিছু মুখচেনা ব্যক্তি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে নিজেদের কব্জা করে এভাবেই একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্যকর্মীর যে প্রকট ঘাটতির কথা এত দিন শুনে এসেছি তার উন্নতির কোনো লক্ষণও দেখিনি। বরং এসব সরকারি হাসপাতালে কারিগরি জনবল নিয়োগ নিয়েও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে কারিগরি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে বড় অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের এ অভিযোগ করেন খোদ নিয়োগ কমিটিরই দুজন সদস্য। এ নিয়োগে প্রার্থীদের একটি অংশের কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকার বিনিময়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লিখিত পরীক্ষায় অস্বাভাবিক বেশি নম্বর পাওয়া এসব প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় এসে মৌলিক ও সহজ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি। অভিযোগ আছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব তাদের তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ কমিটির সদস্য ডা. হাশেমকে ১ কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন; শুধু তাই নয়, কাজটি করে দিলে ডা. হাশেমকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক প্রশাসন পদে পদোন্নতির লোভও দেখিয়েছেন কথিত উপসচিব। জানা গেছে, এ নিয়োগ বাণিজ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন এপিএসও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন। প্রশ্ন হলো, টাকার বিনিময়ে উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিলেন কারা? যারাই লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করুন না কেন তারাও যে এ চক্রের সঙ্গে জড়িত তাতে সন্দেহ নেই। জানা যায়, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগকে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এখন সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয় এ নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অসাধু ব্যক্তিও জড়িত।

করোনা টিকা নিয়েও অভিযোগ আছে সাধারণ মানুষের। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত করোনা টিকার অব্যাহত সরবরাহ প্রাপ্তি নিয়ে প্রথম থেকেই বাংলাদেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করে আসছিলেন। অথচ সে সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং যে বাণিজ্য সংস্থাটি সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এককভাবে টিকা আমদানির সুবিধা পেয়েছিল, চুক্তি মোতাবেক অব্যাহতভাবে টিকা পাওয়া যাবে বলে তাদের দেওয়া সেদিনের সেই প্রতিশ্রুতি আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, চুক্তি অনুযায়ী যে ৩ কোটি টিকা পাওয়ার কথা তার অর্ধেকও বাংলাদেশ পাচ্ছে না। ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে তারা সময়মতো টিকা সরবরাহ করতে পারছেন না; যা তাদের আত্মসমর্পণেরই শামিল। তারা বরং বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেছেন টিকা সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য সরকার যেন ভারতকে অনুরোধ করে। বাংলাদেশ করোনাভাইরাস টিকার জন্য ভারতের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ভুল করেছে। ভারত সরকার বর্তমানে টিকা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে, ফলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি পুরোপুরি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বাংলাদেশ সরকার ভারত ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উৎস থেকে টিকা পাওয়ার আগাম কোনো ব্যবস্থা করে রাখেনি! একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, যে কোনো বৃহত্তর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিকল্প ব্যবস্থার পথ খোলা রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিকল্প ব্যবস্থার গুরুত্ব অনুধাবনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম একই সঙ্গে চালানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করা যাবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় সরকার এখন রাশিয়া কিংবা চীন থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সঙ্গেই এ বিষয়ে অনেক দূর এগিয়েছে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের সংবাদ শুনে অনেকেই আশান্বিত হয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, টিকা আমদানি দ্রুত হবে, না টিকা উৎপাদনে সময় বেশি লাগবে? নাকি দুটোই পাশাপাশি চলতে পারে? তবে সরকার-গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ যে কোনোভাবেই হোক দ্রুত সময়ের মধ্যে একাধিক উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে সবার আগ্রহ থাকবে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি টিকা উৎপাদনে বাংলাদেশের কোন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ঠিকাদারি পায় তা দেখার।

এ আগ্রহের কারণ হলো, অনেকেই মনে করেন বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করে লাভবান হওয়া ও বিদেশে উদ্ভাবিত টিকা এ দেশে উৎপাদনের চুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই নাকি টিকা উদ্ভাবনের দৌড়ে থাকা এ দেশের গ্লোব বায়োটেক উদ্ভাবিত টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন তিন মাস ধরে ঝুলে আছে। ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা হয়। তাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্লোব বায়োটেক প্রয়োজনীয় ১৫ থেকে ১৬টি বিষয়ে তথ্যসংবলিত অতিরিক্ত কাগজ জমা দিলেও কী এক রহস্যজনক কারণে সে অনুমোদন আজও মেলেনি। গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ‘সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে এখন যদি আবার ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলে তাহলে নাকি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ হতে পারে সুতরাং যত দিন তারা না বলেন তত দিন ট্রায়াল বন্ধ থাকবে।’ প্রশ্নে হচ্ছে, দেশের উদ্ভাবিত করোনা টিকার পথ রুদ্ধ করে সরকারের ওই আমলারা কার ‘ইন্টারেস্ট’ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন? অথচ গ্লোব বায়োটেক কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্রায়ালে সফল হলে মানবশরীরে এ টিকা এক ডোজই যথেষ্ট এবং যুক্তিসংগত মূল্যে টিকা কেনা সম্ভব হতো। তাতে সরকারেরও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। উল্লেখ্য, গ্লোব বায়োটেক মাসে ১ কোটি টিকা উৎপাদন করতে পারবে বলে দাবি করছে।

লোকমুখে অনেক কিছু শোনা গেলেও স্বাস্থ্য খাতকে যারা কব্জা করে দেশের জনগণের অর্থ লুটেপুটে খাচ্ছে তাদের পরিচয় জানা থাকলেও মুখে নাম উচ্চারণ করা যায় না; তাতে নাকি নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা হবে। একবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মরহুম খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদকে ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ ও ‘শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারির’ সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির নাম বলতে বলা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যদি তাদের নাম বলি তাহলে আগামীকালই আমি গুম হয়ে যাব’। মরহুম ইব্রাহীম খালেদের এমন বক্তব্যের অর্থ আমরা বুঝতে পারি। স্বাস্থ্য খাতে এখন যে নৈরাজ্য চলছে তা যেন একই সূত্রে গাঁথা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে যারা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাদের লাগাম যে করেই হোক টেনে ধরতে হবে। তা না হলে গরিব মানুষের করের টাকা এভাবেই লুট হয়ে যাবে। মানুষও প্রাপ্য চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। অনেকেই মনে করেন করোনাকালে ধনীরাই নাকি লাভবান হয়েছেন। সুতরাং এ রাহাজানি বন্ধ করা না গেলে একশ্রেণির ধনী ব্যক্তি আরও ধনী হবে। অন্যদিকে এ করোনা পরিস্থিতির শিকার ‘নতুন দরিদ্র’ ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষের সঙ্গে আরও দরিদ্রের সংখ্যা যোগ হবে। গরিব হওয়ার এ অন্তর্জ্বালা বোঝে কতজনে?

লেখক : ব্রিগেডিয়ার (অব.)।

সর্বশেষ খবর