মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

পদ্মায় স্পিডবোট ডুবি

দায়িত্বশীলরা দায় এড়াতে পারেন না

পদ্মায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বেপরোয়াভাবে স্পিডবোট চালানো চালকদের মজ্জাগত অভ্যাস। স্পিডবোট চালকদের কেউ কেউ পেশাদার অপরাধী এমন রটনাও রয়েছে। লকডাউনকালে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ও ফেরিতে যাত্রী পরিবহনে বাধা থাকায় স্পিডবোট চালকদের এখন পোয়াবারো। তারা দু-তিন গুণ ভাড়ায় গাদাগাদি যাত্রী বোঝাই করে বেপরোয়াভাবে বোট চালানোর কসরতেও মেতে উঠছে। এ অপচেষ্টায় গতকাল ভোরে মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে চলাচলকারী একটি স্পিডবোট নোঙর করা বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডে ধাক্কা দিলে সেটি ডুবে যায়। ধারেকাছে থাকা নৌকা ও অন্যান্য নৌযানের তৎপরতায় নদী থেকে তিন-চার জনকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হয় ২৬টি লাশ। ডুবে যাওয়া স্পিডবোটটি মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় ৩০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজারের দিকে যাচ্ছিল। স্পিডবোট ডুবিতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। দুর্ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঈদের ১০ দিন আগে স্পিডবোট ডুবে নারী-শিশুসহ ২৬ জনের প্রাণহানিতে সংলগ্ন এলাকাগুলোয় শোকের ছায়া বিস্তার করেছে। বাংলাদেশের নৌদুর্ঘটনার সিংহভাগই মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বহন ও বেপরোয়া যান চালানোর জন্য ঘটে। গতকালের দুর্ঘটনাটিও তার ব্যতিক্রম নয়। স্পিডবোটে নদী পার হতে সময় কম লাগে বিধায় অনেকে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেন এ বিপজ্জনক নৌযানে। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে নৌপুলিশের চোখের সামনে অহরহ মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট চলাচল করলেও বোধগম্য কারণে তারা নীরব। আমরা আশা করব বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানির পর মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটের বেপরোয়া চলাচলে বাদ টানা হবে। এগুলো দেখভালের দায়িত্ব যাদের তারা মানুষের জীবনের ঝুঁকির কথা ভেবে দায়িত্বশীল হওয়ার চেষ্টা করবেন। নইলে ২৬ জনের অকালমৃত্যু শুধু নয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা হলে তার দায়ও তারা এড়াতে পারবেন না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর