মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল সেমাই

ওদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই সেমাইর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সারা বছর বাজারে যে সেমাই বিক্রি হয় তার প্রায় ৯০ শতাংশই হয় ঈদ মৌসুমে। চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে প্রতি বছর ঈদ সামনে রেখে দেশজুড়ে শুরু হয় সেমাই তৈরির মচ্ছব। চলে নকল ভেজাল সেমাই তৈরির কসরত। অধিকাংশ নকল ভেজাল সেমাই কারখানার পরিবেশ গা ঘিন ঘিন করার মতো। নোংরা স্যাঁতসেঁতে মেঝের মধ্যে ফেলে রাখা হয় ময়দা। সে ময়দায় পানি দিয়ে পা মাড়িয়ে মণ্ড তৈরি করেন শ্রমিকরা। মেঝেতে রাখা মন্ডে পড়ে থাকে মাছি এবং বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। এভাবে মণ্ড বা খামির মেশিনে দিয়ে বানানো হয় চিকন ও লাচ্ছা সেমাই। সেমাইতে মেশানো হয় কৃত্রিম রং। মেশিনে সেমাই কাটা শেষে খোলা উঠানের মধ্যে ফেলে রাখা হয়। নোংরা পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ধারে রোদে শুকানো হয় সেমাই। সেমাই শুকালে নিয়ে আসা হয় ভাজার জন্য। রাজধানীর পুরান ঢাকা, সায়েদাবাদ ও কেরানীগঞ্জের কামরাঙ্গীর চর এলাকা ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সেমাই কারখানা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ধরেছে নকল ভেজালের সঙ্গে যুক্ত অসৎ ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এমন অভিযানের সংখ্যা খুবই নগণ্য। অসাধু ভেজাল ব্যবসায়ীর দল চকচকে মোড়কে মুড়িয়ে বিএসটিআইর ভুয়া সিল লাগিয়ে নকল ভেজাল সেমাই তুলে দেয় মানুষের হাতে। ভেজাল খাবার খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে লাখ লাখ মানুষ। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে ভেজাল খাবার খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে গ্যাসট্রিক, ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে। এ ছাড়া এসব খাবারে বিভিন্ন রকমের জীবাণু থাকায় অনেক সময় টাইফয়েড ও প্যারা টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বৃদ্ধ ও শিশুদের নকল ভেজাল মানহীন খাবারে মারাত্মক ক্ষতি হয়। ভেজাল খাবারে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েন গর্ভবতী মহিলারা। ক্ষতিকর জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীতে আসে নবজাতক। নকল ভেজাল বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি সেমাই জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এ হুমকির মোকাবিলায় সরকারকে কঠোর হতে হবে।ভেঙে দিতে হবে নকল ভেজালকারীদের বিষদাঁত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর