বুধবার, ৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

তিন শক্তির আক্রমণের মুখেও শেখ হাসিনাকেই চাই

পীর হাবিবুর রহমান

তিন শক্তির আক্রমণের মুখেও শেখ হাসিনাকেই চাই

জোসেফ গোয়েবলস ছিলেন হিটলারের নাৎসি সরকারের তথ্যমন্ত্রী। একজন উন্মাদ একনায়কের বিশ্বস্ত সহচর এবং নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারে চ্যাম্পিয়ন। ১৯৪৫ সালের ১ মে বার্লিনে সস্ত্রীক আত্মহত্যার আগে তারা তাদের ছয় সন্তানকে হত্যা করেন। এতটাই ছিল তাদের পাপ ও অপরাধের বোঝা যে, এর বিকল্প তাদের সামনে ছিল না। ইহুদি হত্যাযজ্ঞে তার হাতই ছিল না, ইহুদিবিরোধী চরম বিদ্বেষমূলক প্রচারণাও ছিল। গোয়েবলস বিশ্বাস করতেন মিথ্যাকে বারবার প্রচার করলে সত্যে পরিণত হয়। মিথ্যা প্রচারণায় তিনি জার্মানিতে হিটলার ও নাৎসিবাদকে তুমুল জনপ্রিয় করেছিলেন।

ইতিহাস হিটলারকে নিষ্ঠুর খুনি ও গোয়েবলসকে মিথ্যাচারের প্রতিকৃতি হিসেবে নিন্দিত করেছে। অথচ গোয়েবলস ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ও মেধাবী। রাজনীতিতে গোয়েবলসীয় মিথ্যাচার জঘন্য গালি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অর্থাৎ যে মিথ্যার কোনো ভিত্তি দূরে থাক, আগা-মাথাও নেই সেটিই গোয়েবলসীয় মিথ্যাচার বলা হয়।

বিশ্বরাজনীতিতে নিন্দিত কুখ্যাত গোয়েবলসের বংশধর বা অনুসারী কেমন তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গোয়েবলসের আদর্শ সন্তানের সংখ্যা দিনে দিনে কী হারে বাড়ছে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুললেই দেখা যায়। দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়াসহ নানা দেশে বসে ইউটিউব, ফেসবুকে নির্লজ্জ মানসিক বিকারগ্রস্তরা সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার এমন কেউ নেই যাদের বিরুদ্ধে নোংরা মিথ্যাচারে নামেনি। গণমাধ্যমকর্মীরা সবচেয়ে বেশি তাদের টার্গেটের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে গণমাধ্যমে যারা নিজেদের ক্যারিয়ার মেধা, শ্রম ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তারাই বেশি টার্গেট হচ্ছেন। এদের সঙ্গে দেশে থাকা একদল ক্যারিয়ার গড়তে ব্যর্থ বেকার বা চাকরিচ্যুত কিংবা মানসিক বিকারগ্রস্ত চরম ঈর্ষাপরায়ণও যুক্ত হয়েছেন।

মেধা-যোগ্যতায় ভালো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ গন্ড মূর্খরাও যখন জনপ্রিয় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে, জ্ঞান দেয় তারা কিন্তু আয়নায় নিজের লজ্জা ও গ্লানির চেহারা দেখে না। একসময় এদের কেউ কেউ মন্ত্রী নেতা দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি চাকরির জন্য সুপারিশ করাতেন। এখন তাদের কেউ কেউ এতটাই দেউলিয়া যে, বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিক দিয়েও একটি চাকরির জন্য আকুতি জানান। গণমাধ্যমে করপোরেট সাংবাদিকতা নিয়েও অনেকে সমালোচনার ঝড় তুলছেন। কিন্তু গণমাধ্যমে বিশাল বিনিয়োগ হওয়ার আগে, শিল্পপতিরা এগিয়ে আসার আগে গণমাধ্যমকর্মীদের যে কত অর্থনৈতিক দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়েছে তা অনেকেই ভুলে গেছেন। সাংবাদিকদের তখন কেউ বাড়ি ভাড়া দিতেন না এবং কোনো মা-বাবা মেয়েও বিয়ে দিতে চাইতেন না। গণমাধ্যম শিল্পে শিল্পপতিদের বিশাল বিনিয়োগ সংবাদকর্মীদের জন্য সুদিন এনেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তার পরও কেন গণমাধ্যমকর্মীদের অনেকে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েন। কেন বেকারত্বের যন্ত্রণা ভোগ করেন? খোঁজ নিলে দেখা যাবে হাতে গোনা কিছু মিডিয়া হাউস ছাড়া কেউ সরকার-ঘোষিত ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেনি। অনেকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নেতৃত্বে আছেন দেখা যায় তাদের প্রতিষ্ঠানের চেয়ে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা অনেক বেশি। আর তাদের প্রতিষ্ঠানেও কর্মরতরা বড় বেশি রুগ্ন। একদম কম বেতনে চাকরি, তাও নিয়মিত দেওয়া হয় না। এখন গণমাধ্যমের বা সাংবাদিকতার মর্যাদা ও ঐতিহ্য নিয়ে যে দু-চারজন আকুতি করেন বা অগণিত পাঠক, স্রোতা, দর্শক চাইলেও তা আর হচ্ছে না। তিন দশক আগে রাজনৈতিকভাবে সাংবাদিকদের মধ্যে যে বিভক্তি এসেছিল এখন তা সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। এখন যারা নীতিকথা আওড়ান তারা তা নিজেরাই বিশ্বাস করেন না। একদল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপকমিটির সদস্য হয়ে কর্মীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। আরেক দল সারা দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে আড্ডা দেন, নাম ঝোলে বিএনপির কমিটিতে এবং উভয় পক্ষই কার্যত দুই দলের সক্রিয় কর্মীতে পরিণত। সাংবাদিক ইউনিয়ন দুই ভাগে ভাগ হতে হতে এখন কার্যত দুই রাজনৈতিক দলের শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। সাংবাদিকতার পেশাগত মানমর্যাদা-ঐতিহ্য এখন সমষ্টিগতভাবে রক্ষার আর কোনো সুযোগ নেই। ব্যক্তিগতভাবে পেশার মর্যাদা রক্ষার লড়াই কেউ কেউ করছেন, করতে পারেন। একদল বিভিন্ন ব্যাংকসহ নানা প্রতিষ্ঠানে সরকারের তরফ থেকে নিয়োগ নিতে ব্যস্ত, আরেক পক্ষ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রেস মিনিস্টার হতে আগ্রহী। এদের মধ্যে সুবিধাবাদীদের দৌড়ঝাঁপও আছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাদের দলীয় অনুগত সাংবাদিকরা তা ভোগ করেছেন, এখন আওয়ামী লীগের এরা করছেন। রাজনীতির পালাবদলে এমনটা চলবে। আরেকদল আছেন পেশাগত দায়িত্ব ইবাদতের মতো পালনের চেয়ে তদবির-বাণিজ্যে ব্যস্ত। রোজ সচিবালয়ে দুয়ারে দুয়ারে ঘোরেন।

যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম তা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে রাজনৈতিক মতাদর্শগত বা চিন্তার ভিন্নতার কারণে যে জঘন্য মিথ্যাচার, নোংরামি চলছে তা দেখলে বলা যায় গোয়েবলসের মতো জঘন্য অপরাধী আত্মহত্যা করেও মরেনি। তার সন্তানদের হত্যা করলেও তারা মরেনি। তার আদর্শ দলকানা, মানসিক বিকারগ্রস্ত আদর্শিক অনুসারীরা নানা দলের বা গোষ্ঠীর ক্রীতদাস হয়ে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এ নিয়ে তাদের লাজলজ্জা নেই। কেউ কেউ পলাতক খুনির মতো বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে লন্ডনের সদর দফতরের নির্দেশনায় সাইবার অপরাধ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সফল হলেও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এদের রুখতে ব্যর্থ। মোস্তাফা জব্বার, জুনাইদ আহমেদ পলক কী করেছেন, কী করেছে বিটিআরসি জবাব নেই। এ তথ্যপ্রযুক্তি শক্তিটা কারা সরকারবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি, উগ্র সাম্প্রদায়িক, জামায়াত, বিএনপি, হেফাজত ও গোয়েবলসের বংশধরদের হাতে তুলে দিয়েছে? এসব জঘন্য মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে মন্ত্রীরা নীরব নিথর। যেন তাদের আনন্দ হচ্ছে। কোনো ব্যবস্থা না নিলেই জনপ্রিয়তা বাড়বে। এমনকি দেশে বসে যারা করছে তাদের বিষয়েও উদাসীন। তারা ছুটছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কত প্রকল্প, কত বরাদ্দ সেখানে তাদের কত দায়িত্ব তা পালন করতে।

আমি বরাবর বলি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমার আদর্শ, মানুষই আমার দল। স্কুলজীবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিন পর্যন্ত ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করলেও এটাই আমি বিশ্বাস করি। অসাম্প্রদায়িক শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই আমার স্বপ্ন। আর বঙ্গবন্ধুর নির্লোভ সহজ-সরল সাদামাটা জীবনের গভীর দেশপ্রেম ও মানবকল্যাণের রাজনীতি কোথাও দেখি না বলে আফসোস করি। অথচ দেশে এক যুগে সবাই আওয়ামী লীগ। এক যুগে কতজন কতভাবে অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে অতীত ভুলে গেছেন, দলের আদর্শিক ত্যাগী কর্মী-নেতাদের কথা ভুলে গেছেন ইয়ত্তা নেই। সেখানে প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, ৫ কেজি চালের লোভ যারা সামলাতে পারে না তাদের রাজনীতি করাই উচিত নয়। রাষ্ট্রপতিও বলেছেন, রাজনীতিবিদদেরই রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। অথচ রাজনীতিটাই আজ রাজনীতিবিদদের হাতছাড়া, রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করতে পারছেন না বলে আকালও দেখা যাচ্ছে। গোটা সমাজ অবক্ষয়ে পতিত। অস্থির, অশান্ত। মায়া-মমতাহীন। বিশ্বাস-আস্থার সংকট তীব্র। প্রতারণা, লোভ, চতুরতা, বেইমানি সেখানে শিল্প। মূল্যবোধ বলে কিছু নেই। রাতারাতি অর্থ ও ক্ষমতার মালিক হওয়ার অসুস্থ নেশা।

যাক, আমার লেখার অগণিত পাঠক-ভক্ত যেমন আছেন তেমনি সমালোচকও আছেন। সমালোচকদের মন্তব্য আমি সব সময় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিই এবং গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করি। আমার লেখার বড় সমালোচক ছিলেন কিংবদন্তি সাংবাদিক মরহুম এ বি এম মূসা। যেদিন লেখা প্রকাশ হতো সেদিনই তিনি ফোন করতেন এবং নানা দিকনির্দেশনাও দিতেন। কিন্তু একালে তিন শক্তির আক্রমণের মুখে পড়তে হয় নিয়মিত। নোংরা গালাগালি শুনতে হয় এবং তাদের জঘন্য গোয়েবলসীয় অপপ্রচারের শিকার হতে হয়। আমিও আমার সিদ্ধান্তে অটল। ছেলেবেলা থেকেই ডানপিটে, একগুঁয়ে-জেদি স্বভাব আমার। কোনো সরকারের কাছ থেকে কখনো কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিইনি, চাইওনি। পেশাগত কাজে এমন কোনো মহল নেই যে কানেকশন গড়িনি। সোর্স ব্যাপক ছিল আমার। দিনে দিনে সমাজের চালচিত্রে নিজেকে গুটিয়ে এনেছি অনেক। খোঁজখবর রাখি। পর্যবেক্ষণ করি। আমাকে যে প্রধান তিন শক্তি নিয়ত আক্রমণ করে তারা হলো- বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের প্যারালাল সরকারের ছায়া অভিশপ্ত সেই হাওয়া ভবনের অনুসারীরা। যারা সেদিন বিএনপিকে ডোবাতেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আরেক শক্তি হলো একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর জামায়াতে ইসলামীর অনুসারীরা। আরেক পক্ষ হলো উগ্র সাম্প্রদায়িক তালেবানি শক্তি হেফাজতে ইসলাম ও তাদের অন্ধ সমর্থকরা। এ ছাড়া দুর্নীতিগ্রস্তদের অনুসারী নষ্ট রাজনৈতিক কর্মী, স্বজাতীয় ঈর্ষাপরায়ণ মানসিক বিকারগ্রস্তরা তো আছেই।

যাক, আমি মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার অ্যারাবিয়ান ব্ল্যাকহর্সের মতো গতিময় নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে দৃশ্যমান উন্নয়ন, অগ্রগতি তার জন্য সমর্থন করি। নারীর ক্ষমতায়ন, শিল্পের বিকাশ, কৃষিতে বিপ্লব, যোগাযোগে উন্নতি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, হাতে হাতে মোবাইল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান, সমুদ্র বিজয়সহ একে একে বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বের নজরকাড়া উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ। করোনাযুদ্ধ সফলভাবে মোকাবিলা, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য সমর্থন করি। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলই নয়, তার ইতিহাস আগলে রাখা দল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তো রয়েছেই। যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের বলি এটা রাজনৈতিক ইস্যু। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি কই? আন্দোলন-সংগ্রাম করে গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনে কে বাধা দিচ্ছে? কিন্তু আমি শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাকেই দেখি। অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশের জন্য বিকল্প হিসেবে বিএনপিকে আমি গ্রহণ না করার অধিকার রাখতেই পারি। বিএনপির জমানায় সব দমন-পীড়ন-দুর্নীতি বাদ দিলেও একুশের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র আর দেশজুড়ে জঙ্গিবাদের বোমাসন্ত্রাস ভুলতে পারি না। সেই সঙ্গে বিএনপি যুদ্ধাপরাধী জামায়াতসহ উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছাড়েনি। ছাড়বেও না। বিএনপিতে অনেক যোগ্য মেধাবী নেতা-কর্মী থাকলেও তাদের হাতে ক্ষমতা নেই। মনোনয়ন ও কমিটি-বাণিজ্য হয়ে যায় অনেক ওপরের চাপিয়ে দেওয়া নির্দেশনায়। যে বিষয়ে বড় নেতারাও কথা বলতে পারেন না। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার এমন কোনো নেতৃত্ব ও দর্শন জনগণের সামনে হাজির করতে পারেনি যা জনগণ বিশ্বাস করবে। আন্তর্জাতিক মহল গ্রহণ করবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এখন জীবিত লাশের মতো। অনেকে বলবেন সরকারের দমন-নির্যাতন। সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের সময় আওয়ামী লীগ নেতারা কারাগারে ছিলেন। তবু দল দাঁড়িয়েছে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করেনি। দেশকে স্বাধীন করা দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আমরা সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করা, আইনের শাসন সুসংহত, বৈষম্য কমিয়ে আনার তাগিদ দিচ্ছি। দুর্নীতিমুক্ত, মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বলছি। আমরা আশা করছি, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে সবার অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ যেখানে মানুষ নিঃশঙ্কচিত্তে ভোট দিতে পারবে যাকে খুশি তাকে। সংসদে সরকার ও বিরোধী দল শক্তিশালী না হলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয় না। এখন বিরোধী দলকে আস্থায় না রাখলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে পারে, যেমন আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে আদায় করেছিল। তাই বলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হিংস্র গোয়েবলসীয় মিথ্যাচার, চরিত্রহনন, মানসিক বিকৃতি জঘন্য প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে এভাবে কদর্য করা যায় না। এটা চলতে পারে না। সরকারকে এটা দেখতেই হবে। জনগণকেও এ গোয়েবলসের বংশধরদের রুখতে হবে। তিন শক্তির আক্রমণের মুখেও আমি বলব, শেখ হাসিনাকেই চাই কারণ তাঁর বিকল্প নেই।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর