বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বিচার পাওয়ার অধিকার গরিব-ধনী সবার

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম

বিচার পাওয়ার অধিকার গরিব-ধনী সবার

২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ সভায় ২৮ এপ্রিল দিনটিকে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই থেকে ২৮ এপ্রিল দিনটি জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিকভাবেই এ বছর দিবসটি পালনের কোনো আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়নি।

আইনগত সহায়তা কী

বিচার প্রক্রিয়ার আগে বা পরে কিংবা যে কোনো স্তরে কোনো ব্যক্তিকে আইনি বিষয়ে প্রয়োজনীয় যে কোনো সহায়তা দেওয়াকেই আইনগত সহায়তা বলা হয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের সংবিধানেই সমতা ও বিচারপ্রার্থীর অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী’। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদ মূলত ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুমোদিত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে বর্ণিত ৭ অনুচ্ছেদের প্রতিফলন। ওই ঘোষণাপত্রের ৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং কোনোরকম বৈষম্য ছাড়াই আইনগত নিরাপত্তা লাভের সমান অধিকারী। কোনোরকম বৈষম্য ছাড়াই এ ঘোষণা ভঙ্গ এবং সে রকম বৈষম্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে সবারই সমান অধিকার রয়েছে।’ ৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘যেসব কাজের ফলে শাসনতন্ত্র বা আইন কর্তৃক মৌলিক অধিকারগুলো লঙ্ঘন করা হয় তার জন্য উপযুক্ত জাতীয় বিচার লাভ বা আদালতের মারফত কার্যকর প্রতিকার লাভের অধিকার প্রত্যেকেরই আছে।’

রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক আর্থিক অভাব-অসচ্ছলতার কারণে আইন বা বিচারের আশ্রয় গ্রহণ বা প্রবেশ করতে (access to justice) পারবে না- এটি কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত নয়। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক যদি তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয় তবে সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন, সমতা, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের বিধান অর্থহীন হয়ে পড়বে। তাই আর্থিকভাবে অসচ্ছল, অসহায়, রাষ্ট্রের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ যেন আইনি প্রক্রিয়ায় প্রবেশ, বিচারের দ্বারস্থ হতে ও আইনজীবী নিয়োগ করতে পারে সেজন্যই প্রয়োজন আইনগত সহায়তা। আইনগত সহায়তার মূল উদ্দেশ্যই হলো অভাবী, অসচ্ছল, সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের আইন-আদালত কিংবা মামলা-মোকদ্দমায় প্রবেশের অধিকার নিশ্চিত করা।

The International Commission of Jurists আইনগত সহায়তার ধারণা দিতে গিয়ে বলেছে, Legal aid includes the provisions of legal advice and representation in the Court to all those threatened as to their life, liberty, property or reputation, who are unable to pay for it.

‘আইনগত সহায়তা’র সবচেয়ে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা পাওয়া যায় জাতিসংঘ-প্রণীত Draft UN Principles and Guidelines on Access to Legal Aid in Criminal Justice Systems শীর্ষক নীতিমালায়। উক্ত নীতিমালার প্রথম ভাগের ৬ নম্বর ক্রমিকে ‘আইনগত সহায়তা’র সংজ্ঞায় বলা হয়,

the term legal aid includes legal advice, assistance and representation for victims and for arrested, prosecuted and detained persons in the criminal justice process, provided free of charge for those without means. Furthermore, 'legal aid' is intended to include the concepts of legal education, access to legal information and other services provided for persons through alternative dispute resolution mechanisms and restorative justice processes.

আইন সহায়তা কার্যক্রম

বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আইন সহায়তা কার্যক্রম দীর্ঘদিন থেকে চলমান। রাষ্ট্রের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের আইনগত সহায়তা দেওয়ার সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতির কারণেই ২০০০ সালে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংসদে গৃহীত হয় এবং ৪ জুন, ২০০০ তারিখে এক প্রজ্ঞাপন দ্বারা একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা, ২০০১ ও আইনগত সহায়তা প্রদান প্রবিধানমালা, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হলে সরকারিভাবে আইন সহায়তার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বর্তমান সরকার আগের নীতিমালা বাতিল করে ২০১৪ সালে নতুনভাবে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা, ২০১৪’ ও ‘আইনগত সহায়তা প্রদান প্রবিধানমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করে। এ ছাড়া প্রণীত হয় ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা (উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন দায়িত্ব, কার্যাবলি ইত্যাদি) প্রবিধানমালা, ২০১১’ এবং ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (আইনি পরামর্শ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি) প্রবিধানমালা, ২০১৫’। উপরোক্ত নীতিমালাসমূহ প্রণীত হওয়ায় ও বর্তমান সরকারের উদ্যোগী ভূমিকার কারণে সরকারি পর্যায়ে আইন সহায়তা কার্যক্রম নতুন গতি লাভ করে, বিস্তৃত হয় এ কার্যক্রম। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৬৪ জেলায় সরকারিভাবে আইন সহায়তা কার্যক্রম চালু আছে। প্রতিটি জেলায় পৃথক অফিস স্থাপন করে একজন সহকারী জেলা জজকে লিগ্যাল এইড অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এবং জেলা ও দায়রা জজ পদাধিকারবলে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চৌকি ও শ্রম আদালতসমূহেও আইন সহায়তা কার্যক্রম চালু আছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আইন সহায়তা কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে; তবে বাস্তব সত্য এই যে উপজেলা এবং ইউনিয়ন কমিটিসমূহের তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যক্রম মূলত শুরু হয়েছে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে।

সরকারিভাবে আইন সহায়তা যারা পেয়ে থাকেন

আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা, ২০১৪ অনুযায়ী সরকারিভাবে আইন সহায়তা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিরা হচ্ছেন- ক. আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তি যার বার্ষিক গড় আয় সুপ্রিম কোর্টে আইনগত সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে নয়; খ. অক্ষম, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন কোনো ব্যক্তি; গ. বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে অক্ষম কোনো মুক্তিযোদ্ধা; এবং কোনো শ্রমিক যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার বেশি নয়; ঘ. এরা ছাড়াও আরও যারা আইনগত সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন- শিশু, মানব পাচারের শিকার যে কোনো ব্যক্তি, শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু, নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি, পারিবারিক সহিংসতার শিকার অথবা সহিংসতার ঝুঁকিতে আছেন এরূপ যে কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এ রকম কোনো ব্যক্তি; ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মাতা, অ্যাসিডদগ্ধ নারী বা শিশু, আদর্শ গ্রামে ঘর বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, অসচ্ছল বিধবা, স্বামীপরিত্যক্তা এবং দুস্থ মহিলা; প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অসমর্থ ব্যক্তি, বিনা বিচারে আটক এমন কোনো ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অসচ্ছল, আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি, জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে সুপারিশকৃত বা বিবেচিত কোনো ব্যক্তি, আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০-এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সংস্থা কর্তৃক সময় সময় চিহ্নিত আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থসামাজিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্বীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার মামলা পরিচালনায় অসমর্থ।

সরকারি আইন সেবার সীমাবদ্ধতা রয়েছে- বিশেষত আর্থিক সীমারেখা নির্ধারণ করায়। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার নিচে তিনিই কেবল নিম্ন আদালতে সরকারি আইনগত সহায়তা পাবেন এবং সুপ্রিম কোর্টের ক্ষেত্রে গড় আয় দেড় লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী ২০১৭ সালে জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার বোর্ডসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যে ব্যক্তির ওপর আয়কর প্রযোজ্য নয় তিনি সরকারি আইনগত সহায়তা পাবেন। কিন্তু অদ্যাবধি এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বর্তমান আর্থিক সীমারেখার গন্ডি অতিক্রম করে রাষ্ট্রের বিপুলসংখ্যক অসচ্ছল-দরিদ্র নাগরিককে সরকারি আইনি সহায়তা প্রদান সম্ভব হবে।

আইনি সহায়তার ক্ষেত্র

সামগ্রিক বিবেচনায় আইন সহায়তার ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে- ১. আইনগত পরামর্শ দান; ২. লিগ্যাল সাপোর্ট অর্থাৎ বিচারপ্রার্থীর পক্ষে মামলা দায়ের ও পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দলিল দস্তাবেজ বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ, মামলার মুসাবিদা প্রস্তুতকরণ; ৩. আদালতে মামলা পরিচালনা ও আইনি নিয়োগ; ৪. কাউন্সেলিং অর্থাৎ বিরোধের সঙ্গে জড়িত পক্ষসমূহকে কাউন্সেলিংয়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উদ্বুদ্ধ করে তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করা যাতে সমস্যা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ পরিবেশে নিজের সার্বিক উন্নতি করতে সক্ষম হন; ৫. পুনর্বাসনমূলক আইনগত সহায়তা অর্থাৎ লিগ্যাল এইডের ম্যাধমে জেল থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ যাতে সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত হতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সরকারিভাবে আইনি সহায়তা কার্যক্রমে পুনর্বাসনমূলক আইন সহায়তার বিষয়টি অনুপস্থিত। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পুনর্বাসনমূলক লিগ্যাল এইডের ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভবত ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদের কোনো এক অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্বাসনমূলক আইন সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে বক্তব্য দিয়েছিলেন। আশা করা যাচ্ছে পুনর্বাসনমূলক আইনগত সহায়তা প্রদানে যাবতীয় নীতিমালা দ্রুতই প্রণীত হবে।

বিকল্প পন্থায় বিরোধ নিষ্পত্তি

২০১৫ সালে আইন সহায়তা প্রদান (আইনি পরামর্শ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা), ২০১৫ প্রণীত হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্যই হলো সামাজিক রীতিনীতি বজায় রেখে কম সময়ে ও কম খরচে পক্ষগণের ভোগান্তি এড়িয়ে উভয় পক্ষের জয়সূচক ফল (win win outcome) নিশ্চিত করা। আপস মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক লিগ্যাল এইড অফিসারের কাছে বিকল্প পদ্ধতি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিচারাধীন কোনো বিষয়ে প্রেরণ করার বিধান রাখা হয়েছে। লিগ্যাল এইড অফিসার কর্তৃক মীমাংসা চুক্তি বা ক্ষেত্রমত, প্রতিবেদন একটি বৈধ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে এবং যে কোনো আইনগত কার্যধারায় সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে। এ ধরনের ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সহকারী জজ হওয়ায় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মামলার বিরোধ নিষ্পত্তি সুযোগের এখতিয়ারের প্রশ্নটি এখনো অনিষ্পন্ন রয়েছে। সুতরাং সব বিতর্ক এড়ানোর জন্য বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যক্রম গতিশীল ও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে সহকারী জজের পরিবর্তে যুগ্ম জেলা জজ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগের বিষয়টি চিন্তা করা যেতে পারে।

আইনগত সহায়তা দিবস পালনের উদ্দেশ্য

আইনগত সহায়তা দিবসের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের সব অসচ্ছল, দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত নাগরিককে আইনের আশ্রয় লাভ ও বিচারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরি করা, পথ দেখিয়ে দেওয়া। আইন সহায়তা সম্পর্কে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আরও ব্যাপক কার্যক্রম ও কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন। দেশে সরকারি আইন সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠন আইন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আইন সহায়তা কার্যক্রমে আইনজীবী সমাজ অর্থাৎ বার কাউন্সিল ও আইনজীবী সমিতিসমূহের যথেষ্ট অগ্রণী ভূমিকার প্রয়োজন, যার ঘাটতি রয়েছে। আইন সহায়তা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে দেশের সর্বস্তরের আদালতসমূহের যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রের অসচ্ছল-দরিদ্র-সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আইন ও বিচারে প্রবেশাধিকার (access to justice) নিশ্চিত হোক- এই হোক আইন সহায়তা দিবসের অঙ্গীকার। রাষ্ট্রের প্রত্যয়-

‘বিচার পাওয়ার অধিকার

গরিব-ধনী আছে সবার’।

লেখক : বিচারপতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্ট বিভাগ এবং চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি।

সর্বশেষ খবর