বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকারি প্রতিষ্ঠান

বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিন

সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর এক বড় অংশ যে অপ্তবাণী দ্বারা পরিচালিত হন তা হলো এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই। স্বাধীনতার পর বেশ কিছু পরিত্যক্ত কলকারখানা কোম্পানি জাতীয়করণ করা হয়। আশা করা হয়েছিল এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগের চেয়ে বেশি শ্রম দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করে তুলবেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান যেহেতু জাতীয় স্বার্থের অনুষঙ্গ সেহেতু এ ব্যাপারে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি থাকবে না। কিন্তু সরকারের এ সদিচ্ছা কোনো কাজেই লাগেনি। সরকারি সংস্থাগুলো জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপচয়ের মচ্ছবে মেতে ওঠে। লুটেরাদের কারণে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে সরকারি বা জাতীয়করণকৃত কলকারখানা চালু না রেখে কর্মীদের বসিয়ে বেতন দিলে তাতে লোকসানের পরিমাণ কম হতো। সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লিমিটেড কোম্পানিগুলোকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য বারবার তাগাদা দিলেও তারা এমনই কুম্ভকর্ণের ঘুমে মগ্ন যে তা শোনার অবকাশই হয়তো ঘটেনি। গত মঙ্গলবার সকালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রমালিকানাধীন সব লিমিটেড কোম্পানিকে ‘নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর’ নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডে সুষ্ঠতা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু অনুশাসন তুলে ধরেছেন। তার একটি হলো সরকারি সংস্থাগুলোকে নিজেদের খরচে চলতে হবে। সরকারি সংস্থা যেগুলো ব্যবসার জন্য স্থাপিত হয়েছে যেমন বিটিসিএল, বীমা, ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স এগুলো নামেই কোম্পানি। তারা যেন নিজেরা নিজেদের খরচ চালাতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে তাদের চালানো অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্ববহ। দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি লাভজনকভাবে চলতে পারে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হবে কেন? লুটেরাদের তৎপরতা বন্ধে এগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর