বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে আগুন

বনের সুরক্ষায় টেকসই পদক্ষেপ নিন

নানান বিপদে আক্রান্ত সুন্দরবনে নতুন উপদ্রব হয়ে উঠেছে ‘আগুন’। সুন্দরবনে সোমবারেরটা নিয়ে গত প্রায় দুই দশকে ২৩ বার আগুন লাগল। এর আগের ২২ বারের অগ্নিকান্ডে অন্তত ৮০ একর বনভূমির নানা গাছ, গুল্মলতা পুড়ে যায়। সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারনী এলাকার বনে লাগা আগুন প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে সুন্দরবন বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকালে দুই দফা বৃষ্টির কারণে ছড়িয়ে পড়া আগুনের তেজ কমে আসে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। এসব অগ্নিকান্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সময়ে বন বিভাগের গঠিত তদন্ত দল নাশকতা, অসচেতনতা, অবহেলায় ফেলে দেওয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুনকে দায়ী করেছে। অভিযোগ রয়েছে, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মাছ শিকারের উপযোগী এলাকা তৈরির জন্য আগুন লাগানো হচ্ছে। বারবার আগুন লাগা থেকে প্রতীয়মান হয় এর পেছনে স্বার্থান্বেষী মহলের হাত রয়েছে। এগুলো নিছক দুর্ঘটনা নয়। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার জন্য নিচু এলাকা মাছ চাষের উপযোগী করা এ আগুনের একটা হেতু হতে পারে। বনকে সুরক্ষা দিতে বন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বনসংলগ্ন মরে যাওয়া নদ-নদী খনন এবং সীমান্ত এলাকায় বেড়া ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটিগুলো। তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি উল্লেখ করে বন বিভাগ, স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীরা বনজ সম্পদ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এ দুর্গম এলাকায় গিয়ে যদি কেউ নাশকতা করতে পারে তাহলে পুরো সুন্দরবনের নিরাপত্তাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে। সুন্দরবন জাতীয় সম্পদ, বিশ্বঐতিহ্যের অংশ। এ সম্পদ যারা ধ্বংস করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর