বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ফকির মজনু শাহ

১৭৬০ সালে বিচ্ছিন্নভাবে ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ শুরু হয়। ১৭৬৩ সালে তা পূর্ণাঙ্গ বিদ্রোহে রূপ নেয় এবং জোরদার হয়ে ওঠে। বিদ্রোহীদের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যস্থল ছিল কোম্পানির কুঠি, ইংরেজ শাসকের অনুগত জমিদারদের কাচারি ও জমিদারি আমলাদের আবাসস্থল। বিদ্রোহীরা যুদ্ধে তরবারি, বর্শা, বল্লম, বন্দুক, অগ্নিনিক্ষেপক যন্ত্র, হাওয়াই ও ঘূর্ণায়মান কামান ব্যবহার করত। ফকিরদের মধ্যে শুধু মজনু শাহ ও তাঁর কয়েকজন খলিফা ঘোড়ায় চড়ে যাতায়াত করতেন। যুদ্ধের সময় খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী এবং যুদ্ধাস্ত্র ও গোলাবারুদ পরিবহনের জন্য উট ব্যবহার করা হতো। বিদ্রোহীদের আক্রমণের গেরিলা রণপদ্ধতি কোম্পানির কর্মকর্তাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তোলে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিদ্রোহীরা কোম্পানির লোকজন, তাদের দফতর ও আবাসনের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালাত। সুপরিকল্পিত আক্রমণ পরিচালনা ও নির্ধারিত যুদ্ধে কখনো কখনো ৫ থেকে ৬ হাজার ফকির-সন্ন্যাসীর সমাবেশ ঘটত। আঠারো শতকের সত্তরের দশকে ফকির ও সন্ন্যাসীর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে উপনীত হয়। গ্রামের সাধারণ লোকেরা বিদ্রোহীদের গুপ্তচররূপে কাজ করত এবং তারা কোম্পানির সেনাবাহিনীর গতিবিধি আগে থেকেই বিদ্রোহীদের জানিয়ে দিত। বিদ্রোহীরা ১৭৬৩ সালে বাকেরগঞ্জে (বরিশাল) কোম্পানির বাণিজ্যকুঠি আক্রমণ করে। তারা সেখানকার কুঠিয়াল ক্যালিকে কয়েক দিন আটকে রেখে কুঠি লুণ্ঠন করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর