শনিবার, ৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বিতর্কিত নিয়োগ

অনিয়মের নিয়োগ বাতিল করা হোক

লাজলজ্জা বলে যে একটি বিষয় আছে সম্ভবত উপাচার্য পদে আসীন হলে তা ভুলে যেতে হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান শিক্ষাঙ্গনের ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা ঘটতে পারত। তিনি তা হতে দেননি। বৃহস্পতিবার তাঁর শেষ কর্মদিবসে অবৈধ উপায়ে শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। এর আগে উপাচার্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা শিথিল করে নিজের কন্যা, জামাতাসহ আরও অনেককে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। তাই তাঁকে চিঠি দিয়ে বেআইনি নিয়োগগুলো বাতিল করতে বলেন। একজন উপাচার্যের কাজ নিজেকে দুর্বিনীত রাখা এবং সর্বোপরি আইনের ঊর্ধ্বে রাখা। এটাই রীতি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ শিক্ষক ৩০০ পৃষ্ঠার এক অভিযোগপত্রে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগ এনেছিলেন। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল। তার পরও নির্লজ্জের সেরা উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন শেষ কর্মদিবসে। বৃহস্পতিবার ছিল উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন। সকাল থেকেই উপাচার্য বাসভবনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি দেখা যায়। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেলা সোয়া ২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবন ছেড়ে চলে যান। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ১২টার দিকে মহানগরী ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীরা মুখোমুখি অবস্থায় চলে যান। ক্যাম্পাসে রটে যায়, উপাচার্যের বাসভবনে পরিষদ শাখার দফতরপ্রধান সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদকে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়ে অ্যাডহকে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া সম্পন্ন করেন। তাঁর এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অমর্যাদার। উপাচার্যরা বিতর্কিত কাজের মাধ্যমে সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় কী পরিমাণ ক্ষতিসাধন করছেন তা সময় বলে দেবে। আমরা মনে করি ব্যক্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্কিত হতে পারে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর