সোমবার, ১৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

দুর্গম গিরিপথে চলার ৪০ বছর

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

দুর্গম গিরিপথে চলার ৪০ বছর

১৯৭৫ সালের আগে একজন ঘনিষ্ঠজনের প্রশ্নের উত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমার পরে আওয়ামী লীগের হাল কে ধরবে তা আমি নিজেও জানি না। তবে এখন আমার সঙ্গে নেতৃত্বের প্রথম ও দ্বিতীয় সারিতে যারা আছেন তারা কেউ আসবেন বলে আমার মন বলছে না। যার কথা এখন ভাবতে পারছি না, এরকম কেউ হয়তো আমার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের হাল ধরবে।’ ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় এবং প্রবল আত্মিক শক্তির অমোঘ কথা এমন সত্যে রূপ নিবে তখন বঙ্গবন্ধু নিজে সেটা বুঝেছিলেন কি না কে জানে। যারা শুনেছেন, তারা হয়তো তখন ভেবেছেন এটা কথার কথা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড, অলৌকিকভাবে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বেঁচে যাওয়া এবং ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে নির্বাসিত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া- এ তিনটিই বিস্ময়কর অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব কাঁধে নিলেন। তারপর বাংলাদেশের কঠিন বাস্তবতায় গণতান্ত্রিক মতাদর্শের মাল্টি ক্লাস ও গণভিত্তিক একটি দল, আওয়ামী লীগের ৪০ বছর একটানা সভাপতি আছেন, চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে যার উদাহরণ দ্বিতীয়টি নেই। তাই শেখ হাসিনা নতুন ইতিহাস গড়েছেন। একমাত্র বোন ছাড়া পরিবারের সব সদস্যের নির্মমভাবে নিহত হওয়ার শোক মাথায় নিয়ে ক্রমাগত নিজ জীবনের চরম হুমকি, দেশি-বিদেশি চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের প্রবল স্রোতের প্রতিকূলতায় কখনো সাহস হারাননি, যুদ্ধের মাঠ ত্যাগ করেননি, এটাই একজন জনবান্ধব রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর বড় সাফল্য। ৪০ বছরের রাজনীতি ও চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে স্বর্গ বানাতে পেরেছেন কি না সে প্রশ্ন যে কেউ করতে পারেন। তবে নরক থেকে তিনি বাংলাদেশকে অনেক অনেক দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। একজনের কৃতিত্ব বিচার করতে হলে তার চলার পথের প্রতিকূলতা, চ্যালেঞ্জ ও হুমকিগুলো সর্বপ্রথম বিবেচনা করা প্রয়োজন।

শেখ হাসিনার দুর্গম পথের সামান্য কিছু বর্ণনা দিই। এক. একজন যতবড় নেতা-নেত্রী হোন না কেন, তিনি সর্বপ্রথম একজন মানুষ। তাই অন্যদের মতোই মানুষের সহজাত আবেগ, অনুভূতি ও মানসিক মিথস্ক্রিয়ার বাইরের কেউ তিনি নন। ১০ বছরের ছোট ভাইসহ পিতা-মাতা পরিবারের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাদের কবরও যথা মর্যাদায় হয়নি। ছয় বছর নির্বাসিত জীবন, দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এলেই হত্যা করার হুমকি। আপনজনের মুখটা শেষবারের মতোও দেখতে পারেননি। এরকম একটা অবস্থায় ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঢাকায় আগমন। ঢাকার বিমানবন্দর ও আশপাশে প্রায় ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি সেদিন শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিল। তা না হলে ফিলিপাইনের বেনিগনো অ্যাকুইনোর মতো ঘটনা ঘটার প্রবল আশঙ্কা ছিল। দুই. দলের কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিলেন। কিন্তু ততদিনে আওয়ামী লীগ আর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নেই। একদল সিনিয়র নেতা ভাবছেন শেখ হাসিনাকে ঐক্যের শিখন্ডী বানিয়ে তারাই সব করবেন। নেতাদের বড় একটা অংশ খুনি খন্দকার মোশতাকের দোসর হিসেবে চিহ্নিত। সামরিক শাসক জিয়ার চক্রান্তে মিজানুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আরেকটি আওয়ামী লীগ গঠন। অর্থাৎ দলের সাংগঠনিক অবস্থা তখন নাজুক। তিন. সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে পাকিস্তানিকরণের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। প্রথমে সামরিক আদেশ দ্বারা এবং পরে সেটিকে জায়েজ করার জন্য ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্টে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বাহাত্তরের সংবিধানকে যেভাবে পরিবর্তন করেছেন তাতে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বলতে যা বোঝায় তার কবর রচনা মোটামুটি হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর নাম, জয় বাংলা স্লোগান, মুক্তিযুদ্ধের কথা ও গান, সবকিছু রাষ্ট্রীয় অঙ্গন থেকে বিলীন হয়ে গেছে। একাত্তরে পাকিস্তানের সহযোগী বড় সব রাজনৈতিক নেতা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সিনিয়র মন্ত্রী হয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত শুধু রাজনীতিতে ফিরেই আসেনি, পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন জোরদার করতে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে গোলাম আযম বাংলাদেশে চলে এসেছেন। চার. সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন পাকিস্তানিকরণ সম্পন্ন হয়েছে। একটার পর একটা অভ্যুত্থানের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে প্রায় মুক্তিযোদ্ধাহীন করে ফেলা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে রাজনীতির মধ্যে জড়িয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা অব্যাহতভাবে চলছে। পাঁচ. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও পাকিস্তান, এই তিন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করে পর্যায়ক্রমে ক্ষমতায় আসা দুই সামরিক শাসক এমন একটি আন্তর্জাতিক শক্তি বলয়ের সৃষ্টি করেন, যার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবে এবং সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক সমর্থনে ধর্মীয় রাজনীতির বিস্তার ঘটতে থাকায় আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক সেক্যুলার রাজনীতির জায়গা ক্রমেই সংকুচিত হতে থাকে। ওপরে এক থেকে পাঁচ ক্রমিকে বর্ণিত প্রতিকূলতা নিয়ে যে যাত্রার শুরু, তার দুর্গম গিরিপথ ক্রমেই আরও জটিল ও কঠিন হয়েছে। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার কিছু দিনের মাথায় নতুন সামরিক শাসন নিয়ে হাজির হন জেনারেল এরশাদ। তিনি সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে চরম শিখরে নিয়ে যান, সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম সন্নিবেশিত করেন। জিয়া ও এরশাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অভিন্ন এবং আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকের জায়গাও একই। আশির দশকের শেষার্ধ্বে যখন দেখা গেল নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে এবং ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করেও শেখ হাসিনাকে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না, তখন পঁচাত্তর-পরবর্তী সুবিধাভোগী এদেশীয় সব পক্ষ এবং এদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যার প্রথম চেষ্টা হয় এরশাদের সময় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারিতে, চট্টগ্রামের এক জনসভায় তখন শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালায়। এ পর্যন্ত তাকে ১৯ বার বিভিন্ন পন্থায়, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, যার উদাহরণ কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো ব্যতীত বিশ্বের আর কোনো নেতার বেলায় ঘটেনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জামায়াত-বিএনপি সরকার রাষ্ট্রের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর দ্বারা প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। শেখ হাসিনার রাজনীতির জায়গা সংকুচিত করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নে এদেশীয় সশস্ত্র জঙ্গিরা মাঠে নামে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা প্রগতিশীল লেখক, বুদ্ধিজীবী, সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির ধারক-বাহক প্রতিষ্ঠান ও অনুষ্ঠানের ওপর গ্রেনেড-বোমা হামলা চালায়। এত বিস্তৃত ও পর্বতসম কণ্টকময় বাধা, সরাসরি হত্যার বহু চেষ্টা ইত্যাদি পাশাপাশি রেখে বিচার করলে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে শেখ হাসিনার অবদান এক কথায় অতুলনীয়। কিছু উল্লেখ করি। প্রথমত, শেখ হাসিনা ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনার পুনরুজ্জীবন ঘটেছে। এটা সবচেয়ে বড় সাফল্য। কারণ, গত ১২ বছরে প্রমাণিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ওপর রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নতি ও সমৃদ্ধির সড়কে উঠেছে, বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও রাজনীতির ফলেই বাংলাদেশ সামরিক শাসনমুক্ত হয়েছে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত এবং রক্ষা পেয়েছে, বাংলাদেশ পরাশক্তির তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র গণভিত্তিক দল আওয়ামী লীগের শক্তিশালী আন্দোলন এবং ২০০৭-২০০৮ মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার দৃঢ়চিত্ত ভূমিকার দিকে তাকালেই আমার উপরোক্ত কথার যথার্থতা বোঝা যায়। তৃতীয়ত, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেছেন এবং আইনের শাসনের পথকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। যত বড় ক্ষমতাশালী হোক, আইনের হাত থেকে কেউ রক্ষা পাবে না, এ সত্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চার. গত ১২ বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে ওঠে আসায় এবং শিক্ষা ও অবাধ তথ্যের বিস্তার ঘটায় গণতন্ত্রের মৌলিক পূর্বশর্ত জনগণের ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হয়েছে, যে যাত্রা এখনো অব্যাহত আছে। পাঁচ. দুই সামরিক শাসক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। সামরিক শাসনের পথ সাংবিধানিকভাবে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক আদর্শ সংবিধানে ফিরে এসেছে। ছয়. মানবতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন শেখ হাসিনা। অসাধারণ চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সবাইকে বাংলাদেশের ভূমি থেকে উৎখাত করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা থেকে শুধু উপমহাদেশ নয়, পুরো বিশ্বের মানুষকে মুক্ত করেছেন। স্থল ও সমুদ্র সীমানার দ্বন্দ্ব নিয়ে বিশ্বের সব অঞ্চল যখন ক্রমশই সংঘাত-সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছে তখন শেখ হাসিনা অসাধারণ রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে দুই প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সব সীমানা দ্বন্দ্ব শান্তিপূর্ণ পন্থায় মিটিয়ে ফেলেছেন। ২০১২ সালে শেখ হাসিনা কর্তৃক জাতিসংঘে উত্থাপিত বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার মডেল ফ্রেমওয়ার্ক কর্মসূচি ১৯৩টি দেশ কর্তৃক গৃহীত হয়। ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে প্রবেশ ও আশ্রয়ের সুযোগ দিয়ে শুধু মানবতা নয়, কয়েক লাখ রোহিঙ্গার জীবন রক্ষা করেছেন। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে প্রবেশে বাধা দিলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়া হাজার হাজার রোহিঙ্গার রক্তে লাল হতো নাফ নদের পানি। অর্জন কম নয়, তবে একই সঙ্গে এখনো প্রত্যাশার জায়গাও কম নয়। প্রধানত এবং প্রথমত, রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের মৌলিক জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধবাদী রাজনীতি এখনো বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। রাজনৈতিক মেরুকরণে জনবিন্যাসের চিত্রটির দিকে তাকালে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থানের সংখ্যা সত্তর-একাত্তরে ছিল মাত্র শতকরা ২০-২৫ ভাগ, যা বর্তমানে অর্থবাহী সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়াতে হেফাজতের মতো চরম উগ্রবাদীদের সঙ্গেও অনেক কিছুতে আপস করতে হচ্ছে, যেটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য আজ কনস্ট্যান্ট একটা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মীয় অন্ধত্ব ও উন্মাদনা থেকে রাজনীতি ও জনমানুষকে মুক্ত করতে না পারলে অর্জন যত বড়ই হোক না কেন, সেটি উবে যেতে পারে যে কোনো সময়। রাজনীতিতে জনমানুষের মেরুকরণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে পরিবর্তন আনার জন্য যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি এবং নীতি-আদর্শহীনতার রাজনীতির কারণে তার সুফল আসছে না। তবে এ পর্যন্ত যা হয়েছে এবং যা এখনো প্রত্যাশিত, সবকিছুর সারাংশ করলে উপসংহারে এসে নিশ্চিত করে বলা যায়, দুর্গম গিরিপথে কণ্টকময় রাজনীতির মাঠে শেখ হাসিনা ৪০ বছর ধরে আছেন বলেই বাংলাদেশ এখনো আরেকটি পাকিস্তান বা আফগানিস্তান এবং পরাশক্তির তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি। মানুষের মনে আশার আলো সৃষ্টি হয়েছে, উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ দেখতে পারছে নতুন প্রজন্ম।  তাই তিনি আজ বাংলাদেশের একজন অতুলনীয় সফল রাজনৈতিক নেত্রী।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর