সোমবার, ১৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকায় ফেরা

স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনা মানতে হবে

কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। সারা বিশ্বের মুসলমান এটি পালন করে খুশির উৎসব হিসেবে। অথচ পরপর দুই বছর আমাদের এই উৎসবের আনন্দ বাধাগ্রস্ত হয়েছে চলমান মহামারীর কারণে। এই মহামারীতে বিশ্বে এ পর্যন্ত মোট ৩৩ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। আর বাংলাদেশে মারা গেছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ; পরীক্ষার মাধ্যমে সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা পৌনে আট লাখের বেশি। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে গেছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবার ঈদে মধ্যবিত্তের বাড়ি যাওয়া একরকম বন্ধ হলেও শ্রমজীবী মানুষের এই বাড়ি ফেরার আকুতি দেখে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায়, আমাদের সমাজটা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। পাকিস্তান আমলে যেমন ছিল দুই অর্থনীতি, এখন সেখানে দুই সমাজ। অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাই যথার্থই বলেছেন, ফ্রম টু ইকোনমিস টু টু সোসাইটিস। উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক বিকাশের সাধারণ নিয়মেই গ্রামের মানুষ শহরে আসবে। অথচ শহরের এই শ্রমজীবীদের কথা মাথায় রেখে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণীত হয় না। শহরের শ্রমজীবীদের আয় গ্রামের চেয়ে বেশি হলেও তাদের জীবন অনেক বেশি অরক্ষিত। শহরের এই জীবনে নেই মর্যাদা, তাই ঈদের মতো উৎসবে তাদের এভাবে গ্রামে ফেরার তাড়া। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ফেরি পারে এবার একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানি হয়েছে। রবিবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস চালুু হওয়ায় অচিরেই ঢাকা স্বাভাবিক, কর্মচঞ্চল ফিরে পাবে। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রিক যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নেওয়া সত্যিই কঠিন হবে। সংক্রমণের হার ঢাকায় বেশি এবং ঈদ উপলক্ষে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশেই সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। আমাদের প্রার্থনা থাকবে তেমন আশঙ্কা যেন সত্যি না হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর