বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

রমজানের শিক্ষা ধরে রাখতে হবে

মো. আবু তালহা তারীফ

রমজানের শিক্ষা ধরে রাখতে হবে

ঈদ উদযাপনের মধ্য দিয়ে তাকওয়া অর্জনের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপ্তি হলো। রমজান প্রশিক্ষণের মাস। রমজানের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী বাকি ১১ মাস জীবনকে রাঙিয়ে নেবে মোমিনরা। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, তিনি আমাদের সুস্থতার সঙ্গে রমজানে তাঁর নৈকট্য অর্জনে সহায়তা করেছেন। মোমিনরা রমজান বিদায় দেবে কিন্তু রমজানের ইবাদত বিদায় দেবে না। রমজানের পরবর্তী সময়ে নিজ জীবনকে আল্লাহর জন্য সঁপে দেব। আমরা রমজানে রোজা রেখেছি কিন্তু রমজানের পরবর্তী সময়ে রোজা রাখার বেশ সুযোগ রয়েছে। সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার এবং চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে নফল রোজাসহ শাবান, জিলহজ, মহররম ও শাওয়ালে রোজা রয়েছে। যা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখতেন। শাওয়ালের রোজার ব্যাপারে হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) বলেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি রমজানের সব ফরজ রোজা রাখল এরপর শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখল সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ মুসলিম। রমজানে রাতে তারাবি ও সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজে মনোনিবেশ ছিল। রমজান চলে যাওয়ায় তাহাজ্জুদের সময় এখনো বিদ্যমান। তাহাজ্জুদের নামাজে আল্লাহর কাছে চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। অতিরিক্ত নফল ও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ে পরকালে জান্নাত লাভে সহায়তা পাওয়া যাবে। অতিরিক্ত নফল নামাজসহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। ফরজ নামাজের পর উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ফরজ নামাজসমূহের পর উত্তম নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদ।’ মুসলিম। রমজানে প্রতি ঘরে কোরআন তিলাওয়াত হয়। রমজান বিদায় হওয়া মানে কোরআন তিলাওয়াত বন্ধ করে দেওয়া নয়। রমজানে যেভাবে কোরআন তিলাওয়াতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল তা ধরে রাখতে হবে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় কোরআন তিলাওয়াত করা উত্তম। আমরা অনেকেই কোরআন পড়তে জানি না, এ ধারণা নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করি না। আসলে আমরা কিন্তু কয়েকটি সুরা নামাজে পড়ি। তা কোরআনের অংশ। এ সুরাগুলো নিয়মিত তিলাওয়াত করতে পারি। সময় নিয়ে কোরআন শিক্ষা করা খুবই জরুরি। হজরত ওসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ বুখারি। কোরআন তিলাওয়াতের সঙ্গে আমরা রমজানে অধিক দান-সদকা করেছি। রমজানকে আমরা দানের মাস হিসেব মনে করেছিলাম। রমজান ছাড়া অন্য মাসেও দান করা যায়। তবে নবী (সা.) সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও রমজানে প্রবহমান বায়ুর চেয়ে বেশি দান-সদকা করতেন। আমরা প্রতিদিন, সপ্তাহে এক দিন কিংবা মাসিক বেতন পেয়ে তার কিছু অংশ দান করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। যা আমাদের জন্য খুবই সহজ। দানে আল্লাহ খুশি হন। অন্তর পবিত্র হয়। দানে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে কাব বিন উজরা! নামাজ আল্লাহর নৈকট্য দানকারী, রোজা ঢালস্বরূপ এবং দান-সদকা গুনাহ মিটিয়ে ফেলে যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে।’ আবু ইয়ালা।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর