শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

খুলনায় পানির সংকট

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

শিল্পোন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। বাড়ছে সমুদ্রের জলরাশির উচ্চতাও। এতে উপকূলবর্তী এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে লবণাক্ততা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে উপকূলের মানুষ। এ অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। খুলনায় পানির সমস্যা এখন যে পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে একে গুরুতর বলেই মানতে হচ্ছে। পানির স্তর যে হারে নিচে নামছে তাতে মহানগরীর ৬০ ভাগ নলকূপে পানি না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রকৃতি মানে দ্রুত বৃষ্টির আশা করা ছাড়া এখন নগরবাসীর সামনে আর কোনো পথ নেই। গত বছর এপ্রিল-মেতে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে পানির স্তর ছিল ২৮ থেকে ৩১ ফুটের মধ্যে, সেখানে চলতি বছরের মে মাসে কোথাও কোথাও তা সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৭ ফুটে নেমেছে। বৃষ্টি না হলে পানির স্তর আরও নিচে নামবে এবং তাতে মহানগরীর ৮০ থেকে ৯০ ভাগ নলকূপে পানি না ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খুলনা ওয়াসা বলছে, খুলনায় প্রতি বছরই পানির স্তর আগের বছরের তুলনায় ৬-৭ ইঞ্চির বেশি নামছে। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির স্তর আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪ ফুট বেশি নিচে নেমে গেছে। সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে পানি তোলার ফলে মাটির নিচের একটা স্তরে পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে। খুলনা মহানগরীর পানির চাহিদার অর্ধেকের কম সরবরাহ করতে পারে খুলনা ওয়াসা। সমস্যা আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে, এর মূলে রয়েছে ভবিষ্যন্মুখী চিন্তা ও পরিকল্পনার অভাব। ১৫ লাখ মানুষের মহানগরী খুলনায় যেখানে পানির চাহিদা প্রতিদিন ২৪ কোটি লিটার, সেখানে ওয়াসার পানি সরবরাহের পুরোটাই ভূগর্ভস্থ পানিনির্ভর। বর্তমান পরিস্থিতির দায় তাই প্রকৃতির ওপর চাপানোর সুযোগ নেই। এর মূলে রয়েছে নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর