সোমবার, ২৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বাইডেনের দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ দেখাতে পারে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ইতি ঘটাতে স্বাধীন ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, তার এই প্রস্তাব ইসরায়েলের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূরে সরে আসা নয়। ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার থেকে তিনি সরে আসেননি। শান্তির জন্য এ অঞ্চলের সব দেশ ও পক্ষকে ইসরায়েলের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে হবে। হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির পর বাইডেনের প্রস্তাব খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ কথা ঠিক যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিন তথা আরব স্বার্থের পক্ষে কথা বলবেন এমনটি আশা করাও বাতুলতা। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে মুসলিম ভোটের প্রায় ৯৫ শতাংশ জো বাইডেনের পক্ষে গেলেও পদ্ধতিগত কারণে তার পক্ষে ইহুদি লবির প্রভাব বলয়ের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রথমত, সে দেশের নির্বাচনে আর্থিকভাবে সচ্ছল ইহুদি লবি প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে। দায়বদ্ধতায় আবদ্ধ হয়ে পড়েন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা। দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের শীর্ষ প্রচার মাধ্যমগুলোর মালিকানার সঙ্গে ইহুদিরা জড়িত। কোনো প্রেসিডেন্ট এই লবিকে অগ্রাহ্য করলে তার পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার সমাধানে স্বাধীন ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিনের যে প্রস্তাব দিয়েছেন এটি নতুন কিছু নয়। ১৯৯৩ সালে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তিচুক্তিতে দুই রাষ্ট্র ব্যবস্থা সমর্থিত হয়েছে। সে সময় হামাস শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান না নিলে স্বাধীন ফিলিস্তিন বাস্তবে রূপ পেত। ফিলিস্তিনিরা ফিলিস্তিনের মালিক সব ন্যায্যতা এ তত্ত্বের পক্ষে থাকলেও ইসরায়েল এক বাস্তবতা। এ ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের সামরিক শক্তির কাছে প্রতিপক্ষ আরব দেশগুলো যে তুচ্ছ তা তিনটি যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে। এ অবস্থায় দুই রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনা শুরুর যৌক্তিকতা রয়েছে। এ ব্যাপারে বাইডেনকেই দুই পক্ষকে  এক টেবিলে বসানোর দায়িত্ব নিতে হবে। ফিলিস্তিন সমস্যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিপর্যয় না চাইলে এ সমস্যার যৌক্তিক সমাধানে  সব পক্ষকে আন্তরিক হতে হবে।

সর্বশেষ খবর