শনিবার, ২৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

উপকূলজুড়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হোক

জোয়ারের পানিতে ভাসছে উপকূল। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জীর্ণশীর্ণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে সর্বনাশা নোনা পানি। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের ও ফসলি জমি। শেষ প্রায় আট মাস আগে আম্ফানের নোনা পানি ঢুকেছিল, সে অভিশাপ থেকে মাত্র কিছুদিন হয় মুক্ত হয়েছিল মানুষ, আবার এখন বিভিন্ন জায়গায় পানি ঢুকে গেল। কে জানে এ পানি মুক্ত হতে আবার তাদের কত দিন লাগবে। এ বিপদে তাদের সহায় যে কেউ নেই তা তাদের ভালো করেই জানা। তাই তো কারও আশায় বসে না থেকে শয়ে শয়ে ছুটে এসে নিজেদের জায়গাজমি, ভিটে, ফসল বাঁচানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছেন। দিনরাত স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন তারা। তারা খুব ভালো করেই জানেন এটা বেগার শ্রম, বিনিময়ে কোনো টাকা তারা পাবেন না। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে মানুষ। সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকার। এদিকে জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি, সুন্দরবনের হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী ভেসে গেছে। নারী, শিশুসহ একাধিক ব্যক্তি মারা গেছেন। পানিবন্দী হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক লাখ মানুষ। অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালীর উন্নয়নবঞ্চনা হয়তো সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নজরে আসে না। জনসম্পৃক্তহীন জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। সাতক্ষীরায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ নিয়ে অনিয়মের কথা জানা গেছে। ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ নিয়মিত ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের শিকার হয়। এর সঙ্গেই যেহেতু আমাদের বসবাস করতে হবে তাই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় টেকসই পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। ঘূর্ণিঝড় থেকে উপকূলকে রক্ষার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক প্রাচীর সুন্দরবন কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। উপকূলের বাঁধ নিয়ে ‘সংস্কার সংস্কার খেলা’ বন্ধ করে বর্তমান উঁচু জোয়ারের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বাঁধ তৈরি করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে বাঁধ তৈরিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর