মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

উপকূলীয় বেড়িবাঁধ

নির্মাণকাজে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করুন

জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রবণতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের উপকূলভাগের লাখ লাখ মানুষ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরের নোনা পানিতে উপকূলভাগের হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। মাছের ঘের তলিয়ে গেছে জলোচ্ছ্বাসে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে কদিন আগে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এক কথায় বিশাল। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে শভঙ্করের ফাঁকি থাকায় লাখ লাখ মানুষ জলোচ্ছ্বাসে ঘর ও জীবিকা হারিয়েছেন। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন উপকূলের বাসিন্দারা। বিশেষ করে কোথাও কোথাও কারও সাহায্যের আশায় বসে না থেকে অনেকেই নিজেদের উদ্যোগে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। খুলনার কয়রায় গ্রামবাসী নিজেরাই নেমে পড়েছেন প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পাঁচ দিন পরও জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যাওয়া খুলনার উপকূলের কয়েকটি পয়েন্টে বাঁধ মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো উদ্যোগই চোখে পড়েনি। এ অবস্থায় রবিবার ভোর থেকে কয়েক হাজার গ্রামবাসী কয়রার মহারাজপুর দশহালিয়া বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ, মাটি, সিমেন্টের বস্তা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেন। দুপুরে নদীতে জোয়ারের আগ পর্যন্ত এভাবে বাঁধের একাংশ মেরামত সম্ভব হয়। আমরা বারবার বলেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের করিৎকর্মাদের ওপর নির্ভর না করে দেশের উপকূল ও হাওর এলাকার বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে। এটি সম্ভব হলে অর্ধেক এমনকি এক চতুর্থাংশ অর্থে এমন বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হবে, যা জলোচ্ছ্বাস বা বন্যার প্রকোপ থেকে সুরক্ষা দেবে। ইয়াস দেশের ভূভাগে খুব একটা ক্ষয়ক্ষতি না ঘটালেও জলোচ্ছ্বাস সুন্দরবনের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় থেকে সুন্দরবনের বাঘ-হরিণসহ প্রাণিকুল রক্ষায় বনের মধ্যে প্রচুর মাটির টিলা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে; যাতে জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর