শনিবার, ৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ধর্ষণ-ভিডিও ধারণ

পরিস্থিতি বড়ই হতাশার

বাংলাদেশে ধর্ষণ কার্যত এক অপ্রতিরোধ্য অপরাধ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। অত্যন্ত কঠোর আইন, নারী অধিকার সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ, সংবাদমাধ্যমের লেখালেখি- কোনো কিছুতেই ধর্ষণকারীদের দৌরাত্ম্য কমছে না। দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বয়সী নারী-শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অপরাধীরা ধর্ষণের ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়ছে। অত্যন্ত নিন্দনীয় এ ঘটনা নিয়ে হাই কোর্টও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হওয়ায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়া উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছে হাই কোর্ট। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে। আদালত বলে, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার হার কম। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হলে নির্যাতনের শিকার নারী এবং তাদের পরিবারে বিরূপ প্রভাব পড়ে। দেশে ৯৯ শতাংশের বেশি মামলায় অপরাধীরা শাস্তির বাইরে থেকে যায়। আসলে কোনো দেশে আইনের শাসন কার্যকর থাকলে অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত হয় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধবৃত্তি দমনের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা সরকারের একান্ত দায়িত্ব। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকার ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ফলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে চলেছে। অন্যদিকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না পেলে অপরাধীদের অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ থেকে যায়। ফলে সব ধরনের অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সুশাসন তথা আইনের শাসন মজবুত করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। তবে ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষতান্ত্রিক এ সমাজে নারীর সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুধু আইনের শাসনই যথেষ্ট নয়, সামাজিক শক্তিরও প্রবল সমর্থন প্রয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর