অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্যই ব্যবসাবান্ধব বাজেট দেওয়া হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়ে। উৎপাদন হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের ভূমিকা ৮০ ভাগ এ কথা মনে রেখেই ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা হয়েছে। বাজেটে দেশি শিল্পে করছাড় দেওয়া হয়েছে। করপোরেট করহার কমানোর ফলে রাজস্ব বাড়বে এমন আশাই পোষণ করেছেন অর্থমন্ত্রী। বলেছেন করোনার টিকা কিনতে টাকার অভাব হবে না। আশা প্রকাশ করেছেন নতুন অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। বাজেট ঘাটতি প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটি পূরণের সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। ২০২১-২২ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী সস্তা নীতিবাক্যের আশ্রয় না নিয়ে কর্মসংস্থানকে লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়ে বাস্তববোধের পরিচয় দিয়েছেন। তবে দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপি বলেছে প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। প্রায় একই ধরনের বক্তব্য এসেছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে। দীর্ঘকালের একান্ত অনুগত বিরোধী দলের ঐতিহ্য ভেঙে তারা বাজেটকে কল্পনাপ্রসূত, মনগড়া ও অবাস্তব অভিহিত করেছেন। সিপিডি বাজেট বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণকে প্রাধান্য দিয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি কোথা থেকে আসবে সেটাই তাদের দৃষ্টিতে দেখার বিষয়। সিপিডির অভিযোগ, বিরাজমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের কোনো মিল নেই। বাজেট নিয়ে সরকার, বিরোধী দল এবং অর্থনীতির গবেষকদের বিশ্লেষণের পার্থক্য থাকবেই এবং এটি একটি বাস্তবতা। তবে স্বীকার করতেই হবে দেশের ইতিহাসের অন্যতম কঠিন সময়ে যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে সবকিছুর চেয়ে সাধারণ মানুষের টিকে থাকার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এটি সরকারের ভালো-মন্দের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এতে তারা কতটা সফল হবেন তা নির্ভর করছে বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর। তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।