মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

শিল্প স্থাপনে ঋণ

ব্যাংকগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

দেশে শিল্প স্থাপন নিয়ে জটিলতা কাটছে না। দ্রুত শিল্পায়নে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহার সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসা হয়। আশা করা হয়েছিল এ সিদ্ধান্ত দেশে শিল্প বিপ্লবের সূচনা করবে। বাড়াবে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত ঋণের সুদহার গড়ে ৩ শতাংশ কমিয়েছে সরকারের পরামর্শে। আমানতের ওপর দেওয়া সুদের হার তার চেয়ে বেশি হ্রাস পাওয়ায় এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের আয় বরং বাড়ারই কথা। কিন্তু ব্যাংকে জমাকৃত টাকা বিনিয়োগ না হওয়ায় তা অলস পড়ে থাকছে। দেশের ৬৭টি তফসিলি ও বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে ছয়-সাতটি সরকারি ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলো বেসরকারি। দেশে শিল্প স্থাপনসহ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য সরকার একের পর এক বেসরকারি ব্যাংক চালুর অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে এসব ব্যাংককে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কমিয়েছে ঋণের সুদহার, যা মূলত ঋণপ্রবাহ বাড়িয়ে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় ঋণ বিতরণ না করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া ওই কৌশল কাজে আসছে না। এতে সংকটে পড়েছেন শিল্প খাতসংশ্লিষ্টরা। করোনা মহামারীর মধ্যে উদ্যোক্তাদের এ সংকট আরও বেড়েছে। করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায়ও মেয়াদি ঋণ দিতে চাচ্ছে না অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংক। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। বেসরকারি ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদানে সংরক্ষণশীল নীতি অনুসরণ করায় বৃহৎ শিল্পে বিনিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। উদ্যোক্তারা ছুটছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দিকে। কিন্তু তারা তাদের ক্ষমতার বাইরে ঋণ নিতে পারছে না যৌক্তিক কারণে। দেশে শিল্পায়ন চাইলে সৎ উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারা ঋণ নিয়ে শোধ করে না এবং কারা খেলাপি হওয়ার দুর্নাম কাঁধে নিতে চায় না তা ব্যাংকগুলোর অজানা নয়। অন্তত এ দিকটা বিবেচনা করে ঋণপ্রবাহ বাড়ালে শুধু শিল্পোদ্যোক্তারা নয়, ব্যাংকগুলোও লাভবান হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর