বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

পাচারকারীদের পাকড়াও করুন

বিদেশে অর্থ পাচার বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ ডেকে আনছে। অর্থ পাচার রোধে দেশে কর্তৃপক্ষের অভাব না থাকা সত্ত্বেও পাচারকারীদের শায়েস্তা করার ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সাফল্য আসছে না। বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে সক্রিয় বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত পাঁচ বছরে বিদেশে অর্থ পাচারের ১ হাজার ২৪টি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই ঘটেছে অর্ধেকের বেশি ঘটনা। এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চিঠি পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। তাদের প্রতিবেদনমতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১৬টি অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫২টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৭৭টি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১২১টি ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘটেছে ৫৮টি অর্থ পাচারের ঘটনা। এর বাইরে গত পাঁচ অর্থবছরে ২ হাজার ২৯০টি অর্থ পাচার ঘটনার তথ্য সরবরাহ করেছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অর্থ পাচারের যত ঘটনা ঘটছে তার সঙ্গে দুর্নীতির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মনে করা হয়, নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য অপরাধীরা বিদেশে অর্থ পাচার করে। অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের এক বড় অংশ আমলা এবং রাজনীতিক এমন ধারণা করা হয়। এর বাইরে রয়েছে সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অশুভ চক্র। বিদেশে অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। প্রতি বছর যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয় তা দেশে বিনিয়োগ হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো। বিএফআইইউ অর্থ পাচারকারীরা দেশের বাইরে কোথায় কী পরিমাণ সম্পদের অধিকারী সে সম্পর্কে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তথ্য দিলেও এ যাবৎ কারও বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা দৃষ্টিগ্রাহ্য নয়। এ গাফিলতি প্রকারান্তরে বিএফআইইউর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেই সংশয় সৃষ্টি করেছে। যা হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর