বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সাইবার প্রতারণা

অপরাধ দমনে শক্ত হোন

সাইবার অপরাধীদের সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে কিশোরী ও তরুণীদের একটি অংশ। সুসংবদ্ধ অপরাধীরা নানা কৌশলে পরিচিত হচ্ছে কিশোরী ও তরুণীদের সঙ্গে। মোবাইল ফোন ও ফেসবুককে তারা শিকার ধরার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রেমের ফাঁদে পড়ার পর কথিত প্রেমিকদের দ্বারাই ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হচ্ছে নারীরা। ছলেবলে সম্ভ্রম লুটে নেওয়ার পর শুরু হয় বিশ্বাসঘাতকতা। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ছবি কিংবা ভিডিও আপলোড করে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী তরুণীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলে। ব্যর্থ হলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এহেন প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগী কিশোরী বা তরুণী বন্দী হয়ে পড়ে নিজ ঘরেই। চার দেয়ালের দুঃসহ যন্ত্রণাময় বন্দীশালায় জীবন হয়ে পড়ে অতিষ্ঠ। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়, চলে যায় চাকরি। আত্মীয়স্বজন এমনকি নিজ পরিবারের সদস্যরাও ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর জীবন্ত লাশের মতোই বেঁচে থাকে অনেকে। সবকিছুর মূলে রয়েছে নেট প্রতারণার আগ্রাসী থাবা। এ থাবা থেকে কিশোরী স্কুলছাত্রী থেকে শুরু করে গৃহবধূ কারও যেন রেহাই নেই। তথ্যপ্রযুক্তি মানবসমাজের সামনে আবিভর্‚ত হয়েছিল বিজ্ঞানের আশীর্বাদ হিসেবে। কিন্তু এর অপব্যবহার পশ্চাৎপদ সমাজগুলোয় মূর্তমান অভিশাপ হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর অসংখ্য নারী সম্ভ্রম হারাচ্ছে ফেসবুক ফ্রেন্ডদের হাতে। নারী পাচার চক্র ঢালাওভাবে ব্যবহার করছে ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অতিসম্প্রতি ইউটিউবে ভারতে একজন বাংলাদেশি নারীর নির্যাতনের ছবি ভাইরাল হলে নেট প্রতারণার কালো অধ্যায়টি সামনে আসে। সক্রিয় হয়ে ওঠেন আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ থেকে যে শত শত নারীকে ভারতের বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছে সুসংবদ্ধ সাইবার অপরাধী চক্র সে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। যাদের কেউ কেউ পালিয়ে দেশে ফিরে জানিয়েছে তাদের দুর্ভাগ্যের ইতিকথা। নেট প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই কড়া হতে হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর