শনিবার, ১২ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

নারী পাচার

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তরিক হতে হবে

বাংলাদেশের নারী পাচার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দুর্ভাগ্যজনক হলো, দেশের ভিতরে এই পাচারকারী চক্রের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের খবর আগেভাগে জানা যায় না। জানা যায় যখন পাচার ও প্রতারণার শিকার নারী ও পুরুষ বিদেশে গিয়ে দুর্বিষহ পরিস্থিতির শিকার হন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডেরা দুবাই, বার দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ, ফুজাইরা ও রাস আল খাইমায় অন্তত ৪০-৪৫টি ড্যান্স বার রয়েছে। বাঙালিরাই এসব বারের মালিক। সম্প্রতি ভারতের মুম্বাই ও বেঙ্গালুরুতে বিভিন্ন হোটেল আর ড্যান্স পার্টিতেও একইভাবে তরুণীদের নানা কাজে ব্যবহারের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে তরুণীদের পাচারে সক্রিয় রয়েছে অন্তত ২০০ সংঘবদ্ধ চক্র। আর তাদের জাল ছড়িয়ে রয়েছে সারা দেশে। তাদের প্রধান লক্ষ্য নিম্নবিত্ত পরিবারের তরুণীরা। তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সেখানে নিয়ে যৌন পেশায়ও বাধ্য করা হচ্ছে। ভারতে পাঠানোর সময় বৈধ ও অবৈধ পথ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু দুবাইয়ের ক্ষেত্রে তরুণীদের মূলত তিন মাসের পর্যটক ভিসায় পাঠানো হয়। তরুণীদের সংগ্রহ, পাসপোর্ট করানো, ভিসা সংগ্রহ, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার করানো এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সবখানে এ চক্রের লোক রয়েছে। পাচারকৃত নারীদের বেলায় নতুন পাসপোর্ট করানোর ক্ষেত্রে চক্রেরই একটি অংশ অভিভাবক সেজে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে। অপরাধ দমনে দেশে অনেক বাহিনী কাজ করছে। গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছে। তার পরও নারী পাচারের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না। অতীতে আমরা দেখেছি যখন কোনো অপরাধী চক্র ধরা পড়ে, তখন তাদের নিয়ে কিছুদিন তৎপরতা চলে। তারপর সবাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। নারী পাচার রোধে একাধিক আইন আছে। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে কেউ মানব পাচারের মতো দুষ্কর্মে লিপ্ত হতে না পারে, তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর