সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ছে খুনখারাবি

বিকারগ্রস্ততা রুখতে হবে

দেশে তুচ্ছ কারণে সহিংস হয়ে উঠছে মানুষ। ঘটছে একের পর এক খুনের ঘটনা। করোনাকালে এ প্রবণতা প্রকটভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মানুষের জীবন-জীবিকার সংগ্রাম কঠিন হয়ে ওঠার প্রতিক্রিয়া পড়ছে নাগরিকদের একাংশের মনোজগতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং দাম্পত্য কলহের জেরে তুচ্ছ ঘটনায় খুনখারাবি বেশি ঘটছে। মাদকাসক্ত ও একাধিক বিয়ের কারণেও বাড়ছে খুনের ঘটনা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের জারি করা বিধিনিষেধের মধ্যেই গত এক মাসে রাজধানীতে ১৮ খুন ও ৩৭ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, সামাজিক অবস্থা, অর্থনীতি, রাজনীতি ও মহামারী মানুষের আচরণের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের মনের ওপর যখন এগুলোর বিরূপ প্রভাব পড়ে তখনই মানুষ উগ্র আচরণ করে। এ জন্য আইনের মাধ্যমে মানুষকে সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট যেন দেওয়া যায় এমন পদক্ষেপ সরকারের নেওয়া উচিত। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত সারা দেশে ২৫৫ শিশু খুন হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১০৭টি। খুন হওয়া শিশুর মধ্যে ৬০ জনের বয়স ছয় বছরের নিচে এবং সাত থেকে ১২ বছরের মধ্যে ৬৭ জন শিশু। তুচ্ছ কারণে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার মতো মানসিক বিকারগ্রস্ততা যেভাবে থাবা বিস্তার করছে তা উদ্বেগজনক। এ উদ্বেগের অবসানে পারিবারিক পর্যায়ে সহনশীল মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। যাদের মধ্যে অসহিষ্ণুতার মনোভাব মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তাদের মানসিকভাবে সুস্থ করে তুলতে উদ্যোগী হতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ মানসিক অসুস্থতায় ভুগলেও এটিকে অনেকে কোনো রোগ বলেই মনে করেন না। অথচ করোনাকালে জীবন-জীবিকার সংকটে মানসিক অসুস্থতা বাড়ছে এবং তা খুনখারাবির মতো ভয়াবহ অপরাধের দিকে মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে। যা রোধে সমাজবদ্ধ সবাইকে সচেতন হতে হবে। হতাশার বিষবাষ্প কাটিয়ে উঠতে মানুষের মনে আশার আলো জাগিয়ে তুলতে হবে।  দেশজুড়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর