মঙ্গলবার, ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ফিলিস্তিনের মুক্তিযুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৮ হাজার বাংলাদেশি অংশ নিয়েছেন। লেবাননের ইংরেজি দৈনিক আল-আখবারে ওই মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ১৯৮৭ সালে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের ঢাকা সফরকালে তাঁকে জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮ হাজার তরুণ পিএলওর পক্ষে যুদ্ধ করতে গেছেন। স্মর্তব্য, ফিলিস্তিনের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তরুণের বড় অংশই ছিলেন জাসদসহ বিভিন্ন বাম ও প্রগতিশীল দলের সদস্য। দশম জাতীয় সংসদের একজন সদস্যও এ কৃতিত্বের অধিকারী। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে বাংলাদেশিদের বীরত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। সিরিয়া সমর্থিত ফিলিস্তিনিদের বিপ্লবী সংগঠন প্যালেস্টাইন ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) নেতা, লেবাননের শাতিলা শিবিরের পরিচালনা পরিষদের সদস্য জিয়াদ হামমো বলেছেন, বাংলাদেশি যোদ্ধারা সামরিক দিক দিয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাদের কেউ কেউ এত সুন্দর আরবি বলতেন যে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে ভাবতে কষ্ট হতো। এ যোদ্ধাদের কেউ কেউ শহীদ হয়েছেন। ইসরায়েলি হানাদারদের হাতে বন্দী হয়েছেন কেউ কেউ। শহীদ বাংলাদেশিদের একজন কামাল মোস্তফা আলী। লেবাননের হাই রক ক্যামেলের যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। ২০০৪ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের বন্দীবিনিময়ের সময় তার লাশ ইসরায়েলিরা ফেরত দেয়। শাতিলা শরণার্থী শিবিরের বাইরে শহীদ গোরস্থানে তাকে প্রথমে দাফন করা হয়। পরে তার দেহাবশেষ বাংলাদেশে স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়। ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামে বাংলাদেশি যোদ্ধাদের অংশগ্রহণের কথা নিশ্চিত করেছেন পিএলওর লেবানন শাখার সম্পাদক ফাতি আবু আল আরাফাত। তিনি আল-আখবারকে বলেছেন, এক থেকে দেড় হাজার বাংলাদেশি তাদের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। পিএলওর এমন ব্যাটালিয়ন ছিল যা বাংলাদেশিদের নিয়ে গঠিত। তিনি বাংলাদেশি যোদ্ধাদের প্রশংসা করে বলেছেন, তারা ছিলেন সুশৃঙ্খল। অসম্ভব দৃঢ় ছিল তাদের মনোবল। হানাদার ইসরায়েলি সেনাদের হাতে আটক হওয়ার পর নির্যাতনের মুখেও তারা পিএলওর পক্ষে বলেছেন এবং ইসরায়েলকে ধিক্কার দিয়েছেন। এমনকি গাজায় ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হামাসের যেসব যোদ্ধা লড়াই করছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশি তরুণরাও রয়েছেন। তাদের অন্তত একজন শহীদও হয়েছেন।

জাফর খান।

সর্বশেষ খবর