যে কোনো মহামারী প্রতিরোধে লকডাউন একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি এবং যেসব দেশ করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে তারা বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশেও মহামারী পরিস্থিতি প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে তুলনামূলক ভালো থাকার পেছনে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি পালনের অবদান অনস্বীকার্য। এ সত্যটি মনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঝুঁকি না নিয়ে স্থানীয়ভাবে কঠোর লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেছেন, কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হলে সে এলাকায় চলাচলসহ অন্যান্য কার্যক্রম কঠোরভাবে বন্ধ করে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে হবে। ৬ জুন দেওয়া চলমান লকডাউন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অন্যান্য বিধিনিষেধের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে লকডাউন আরোপের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়। এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের পাঁচটি নির্দেশনার চতুর্থ নম্বরে বলা হয়, কভিড-১৯-এর উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে স্ব-স্ব এলাকার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতি ১৪ মাস ধরে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত মাসের শেষের দিকে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ভারতীয় ঘরানার করোনার থাবা জনমনে আশঙ্কার সৃষ্টি করে। তারপর সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোয় লকডাউন জারি করা হয়, তা প্রতিপালনেও নেওয়া হয় কড়াকড়ি ব্যবস্থা। যার সুফল হিসেবে বেশির ভাগ জেলায় সংক্রমণ কমেছে। আমাদের মতে সংক্রমণ বাড়ছে এমন এলাকাগুলোয় লকডাউনের পাশাপাশি রাজধানীসহ অন্যসব এলাকায় মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা দরকার। সব ধরনের ভিড় এড়াতেও সতর্ক হতে হবে। করোনার অভিশাপ থেকে নিজেদের রক্ষায় সেটি এখনো পর্যন্ত প্রকৃষ্ট উপায়। পাশাপাশি টিকা সংগ্রহেও যত্নবান হতে হবে।