রবিবার, ২০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

মানসিক অসুস্থতা

ছড়িয়ে পড়ছে বিপজ্জনকভাবে

দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। করোনাকালে এটি যে সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে তা সহজেই অনুমেয়। মানসিক অসুস্থতার বিষয়ে হালনাগাদ কোনো জরিপ নেই। ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের হতাশা, বিষণ্ণতা ও অবসাদের কারণে এ সংক্রান্ত অসুস্থতা ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। ২০১৮-১৯ সালে পরিচালিত সর্বশেষ জাতীয় জরিপ অনুযায়ী দেশের প্রায় ১ কোটি ৭৭ লাখ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গত ১৪ বছরে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মানসিক রোগী বেড়েছে ৫৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৮ জন। করোনাকালে এ পরিস্থিতি আরও ব্যাপক রূপ নিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাকালে মানসিক রোগের ঝুঁকি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। জীবিকার সংকট, ভয়, আতঙ্ক, চোখের সামনে বীভৎস মৃত্যু ও নৃশংসতা নাগরিকদের একাংশকে মানসিক রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানসিক সমস্যার কারণে মানুষের সহ্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে বহুগুণ। দেশে এলএসডির মতো মাদক সেবন চলছে, মাদকাসক্ত হচ্ছে মানুষ, আত্মহত্যা বাড়ছে। সন্তানকে হত্যা করছে বাবা কিংবা মা, স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করছে স্বামী। মানুষকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করছে। দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে ইয়াবা, হেরোইন, আইস এবং অন্য ধরনের মাদকাসক্তিও ভূমিকা রাখছে। সন্দেহ নেই এক সময় বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত দেশ। জীবন-জীবিকার সংগ্রামে জনগোষ্ঠীর একাংশের মানসিক স্বাস্থ্য ছিল যৌক্তিক কারণেই প্রশ্নবিদ্ধ। কালের বিবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। দরিদ্র দেশের লজ্জা কাটিয়ে মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু মানসিক রোগাক্রান্তদের সংখ্যা সে হারে কমেনি। করোনাকালে দেশের বেশির ভাগ মানুষের আয় কমে যাওয়া এবং বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধিতে মানসিক অসুস্থতার ঢল নেমেছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের বেশির ভাগই এখন এ অসুস্থতার শিকার। করোনাকালে এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, দুনিয়াজুড়েই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার নিরসনে কর্মসংস্থানের দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।  সমাজের সব অংশকে এ দুঃসময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর দায়বদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর