বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা

নির্বাচন কমিশনকে শক্ত হতে হবে

স্থানীয় সরকারকে দুনিয়াজুড়েই জনগণের সরকার অভিহিত করা হয়। যে সরকারের সঙ্গে থাকে সরাসরি তৃণমূল মানুষের সম্পর্ক। আমাদের দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার হলো ইউনিয়ন পরিষদ। এ পরিষদের নির্বাচন কেন্দ্র করে দেশের প্রতিটি এলাকায় ভোটারের মধ্যে উৎসবী পরিবেশ গড়ে ওঠে। যা অন্য কোনো নির্বাচনে দেখা যায় না। বাংলাদেশ ভূখন্ডে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা চালুর পর থেকে তার মূল চেতনা ছিল অরাজনৈতিক। এর ফলে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট নন এবং সুশিক্ষিত ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত লোকজনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সাহস পেতেন। নির্বাচনে প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচয় সাধারণত প্রাধান্য পেত না। কিন্তু দলীয়ভাবে নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ধন্ধিতার বিধান চালু হওয়ার পর স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক হানাহানি নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোমবার প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় তিনজন নিহত হয়েছেন। হতাহতসহ বেশ কিছু কেন্দ্রে গোলযোগ ঘটলেও ২০৪ ইউপিতে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে এমন দাবিই করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউপির দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। নির্বাচনী সহিংসতায় বরিশালে নিহত হয়েছেন দুজন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। কেন্দ্র দখল, প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম, কর্মী-সমর্থকদের মারধরসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন ইউপিতে ভোট বর্জন করেছেন অনেক প্রার্থী। ঝালকাঠির মঠবাড়ীতে ব্যালট ছিনতাই হয়েছে। মঠবাড়ী ইউপি নির্বাচনে সিল, কালি ও ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভোট কারচুপি ও সহিংসতার কারণে সংসদ নির্বাচনের ওপর মানুষের আগ্রহ শূন্যের পর্যায়ে পৌঁছানোর হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের মতো  ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পর দলের অফিশিয়াল প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর  সমর্থকদের সহিংসতা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে কেড়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃঢ় ভূমিকা প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর