শিরোনাম
শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

‘কিতনা বদল গ্যায়া ইনসান’

মহিউদ্দিন খান মোহন

‘কিতনা বদল গ্যায়া ইনসান’

‘দ্যাখ তেরে সনসার (সংসার) কী হালত, ক্যায়া হোগেই ভগবান/ কিতনা বদল গ্যায়া ইনসান/ সুরুজ না বদলা, চাঁদ না বদলা, না বদলা রে আসমান/কিতনা বদল গ্যায়া ইনসান’। ১৯৫৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মুম্বাই সিনেমা ‘নাস্তিক’-এর একটি গান। গানের কথাগুলোর বাংলা তরজমা হলো- হে ভগবান, তোমার দুনিয়া দেখ, মানুষ কি রকম বদলে গেছে! সূর্য, চাঁদ, আসমান কিছুই বদলায়নি। অথচ মানুষ বদলে গেছে। গানটিতে কী বলা হয়েছে তা বুঝতে কারও কষ্ট হওয়ার কথা নয়। মানুষের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, হিংস্রতার প্রতিবাদই গানটির প্রতিপাদ্য। মূলত ভারত বিভাগের আগে উপমহাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। মানুষের নিষ্ঠুরতা ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থে কতটা ভয়ংকর হতে পারে এবং তার ফলে মানবতা কীভাবে ভূলুণ্ঠিত হয় ছবিটির কাহিনির মধ্যে তা-ই বলার চেষ্টা করা হয়েছে। ছবিটি মুক্তির পর পেরিয়ে গেছে ৬৭ বছর। যে প্রেক্ষাপটে নাস্তিক ছবিটি নির্মিত হয়েছিল সে প্রেক্ষাপট এখন হয়তো নেই। কিন্তু মানুষের যে বদলে যাওয়া বা পরিবর্তন সে ধারা কিন্তু অব্যাহত আছে। বলাটা বোধকরি অত্যুক্তি হবে না ১৯৫৪ সালের তুলনায় মানুষের মানবিক মূল্যবোধ, মায়া-মমতার আরও অধোগতি সাধিত হয়েছে। মানুষ এখন স্বার্থের জালে এমনভাবে বন্দী যে তারা সময়ে সময়ে অন্ধ হয়ে যায়। স্বার্থের জন্য ভাই ভাইয়ের বুকে, সন্তান পিতা-মাতার বুকে, স্বামী স্ত্রীর বুকে, স্ত্রী স্বামীর বুকে ছোরা বসিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

সৃষ্টিকর্তা এ বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করে মানুষকে তাঁর সৃষ্টির সেরা জীব ঘোষণা করেছেন। আল্লাহর সৃষ্ট সব জীব-জানোয়ার, বৃক্ষ-তৃণলতা, জল, বায়ু সবই মানুষের খেদমতের জন্য, ভোগের জন্য। মানুষ সৃষ্টির আগে তিনি চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, আসমান-জমিন, বন-বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেছিলেন। তারপর মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তা আবাদ করার জন্য। স্রষ্টার সৃষ্টির সেসব উদ্ভিদ বা প্রাণীর কোনো পরিবর্তন হয়নি। চন্দ্র-সূর্যেরও কোনো পরিবর্তন নেই। সৃষ্টির শুরু থেকেই সূর্য আলো দিয়ে যাচ্ছে, তার কাছ থেকে আলো পেয়ে চাঁদ রাতের বেলায় পৃথিবীকে আলোকিত করছে। প্রতিদিন সূর্য পুব দিকে উদিত হয়ে পশ্চিমে অস্ত যাচ্ছে। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় নেই। সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্টির যেটাকে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেটা ঠিক সেভাবই কাজ করে যাচ্ছে। পৃথিবী ২৪ ঘণ্টায় একবার নিজের কক্ষপথে ঘুরছে, যার ফলে আমরা দিনরাতের দেখা পাচ্ছি। যেদিন এ সৌরমন্ডল ধ্বংস হয়ে যাবে আল কোরআনের বাণী মোতাবেক সেদিনই হবে কিয়ামত।

মানুষের সেবা করলে আল্লাহ খুশি হন। এ ক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দের অমর বাণী- ‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’ স্মরণযোগ্য। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহ আমাদের এ সুন্দর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আমরা কি তার মর্যাদা দিতে পারছি?
পশুপাখি, গাছপালার মতো আল্লাহ বিশেষ কিছু উদ্দেশ্য নিয়েই মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তার মধ্যে স্রষ্টার আরাধনা এবং অন্যের কল্যাণে নিয়োজিত করা অন্যতম। আল কোরআনে আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেছেন, তাঁকে পেতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে ভালোবাসতে হবে। মানুষের সেবা করলে আল্লাহ খুশি হন। এ ক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দের অমর বাণী- ‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’ স্মরণযোগ্য। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহ আমাদের এ সুন্দর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আমরা কি তার মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি তাঁর নির্দেশিত পথে চলতে পারছি? পৃথিবী বহুধর্মে বিভক্ত। একেক সম্প্রদায়ের মানুষ একেক পদ্ধতিতে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেন, উপাসনা করেন। তাঁকে খুঁজতে মুসলমান যায় মসজিদ-কাবায়, হিন্দু যায় মন্দির, গয়া-কাশি-বৃন্দাবনে, খ্রিস্টান যায় গির্জায়, বৌদ্ধ যায় প্যাগোডায়। কার আরাধনা তিনি কবুল করবেন বা করবেন না আমরা জানি না। মানুষ একটি বিশ্বাস নিয়েই বেঁচে থাকে। আর সে বিশ্বাসের নামই ধর্ম। আর হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি কোনো ধর্মই সমর্থন করে না। প্রচলিত একটি কথা হলো, ‘সব ধর্মের মর্মবাণী শান্তি ও মানবকল্যাণ’। কিন্তু ধর্মের সেই মর্মবাণী আমরা কতটুকু হৃদয়ে লালন করছি, মেনে চলছি এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। আমরা যদি আমাদের চারপাশটা একটু ভালোভাবে পর্যক্ষেণ করি তাহলে হিন্দি ছবি নাস্তিকের ওই গানের প্রতিফলন দেখতে পাব সন্দেহ নেই। খোদার সৃষ্টি পৃথিবীর সবকিছু সেই আগের মতোই আছে। শুধু বদলে গেছে মানুষ। কেউ কেউ বলতে পারেন পৃথিবীর আবহাওয়া তো অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। হ্যাঁ, তা যে হয়েছে অস্বীকার করা যাবে না। তবে সেটা প্রকৃতির মূল চরিত্র বদলে দেয়নি। এখনো গ্রীষ্মকালে গরম পড়ে, শীতে প্রচন্ড ঠান্ডায় আমরা কাঁপি। বর্ষাকালে আকাশ থেকে অঝোর ধারায় নেমে আসে বৃষ্টি। এগুলো লাখো কোটি বছর আগে যেমন ছিল এখনো তেমনি আছে। হয়তো এসবের তীব্রতার কমবেশি হয় মাঝেমধ্যে।

কিন্তু মানুষের বদলটা চোখে পড়ার মতো। কখনো কখনো মনে হয় সৃষ্টিকর্তা বুঝি বা ওইসব মানুষের মন থেকে মায়া-মমতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসা, সহমর্মিতা-সহানুভূতির গুণগুলো তুলে নিয়েছেন। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (১৭৬১) অবলম্বনে শহীদ মুনীর চৌধুরী রচিত ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকে অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলার মুখে একটি সংলাপ আছে- ‘মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়। কারণে অকারণে বদলায়, সকালে বিকালে বদলায়’। শহীদ মুনীর চৌধুরীর এ সংলাপের যথার্থতা নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে, আমার মনে হয় না। প্রকৃতই মানুষ ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। বাংলা ভাষায় একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ- ‘মানুষের মন, আকাশের রং’। আকাশের রং যেমন যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে, মানুষের মনও তেমনি যে কোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তবে অকারণে নয়, কারণেই বদলায়। আর সে কারণটি হলো স্বার্থপরতা। স্বার্থপরতার কারণেই মানুষ বদলে যায়। মুহুর্তেই তার রূপ পাল্টে যেতে পারে। প্রচলিত বাংলায় এটাকে বলে ‘চোখ পাল্টি দেওয়া’। সমাজের কিছু মানুষ এ চোখ পাল্টিতে বড়ই ওস্তাদ। স্বার্থের একটু এদিক-ওদিক হলেই এসব মানুষ নিজেদের বদলে ফেলে। বন্ধু হয়ে যায় চরম শত্রু, স্বামী বা স্ত্রী হয়ে যায় একে অন্যের ঘাতক। একটি বিষয় সচেতন মানুষদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা ও নৃশংসতার প্রবণতা ক্রমেই ভয়ংকর রূপে বাড়ছে। এখন কেউ কেউ খুন করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, মৃত ব্যক্তির লাশ কয়েক টুকরা করে ফেলছে। ১৯৮৯ সালে বিক্রমপুরের লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাতিন খানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওরা তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার লাশ টুকরো টুকরো করে পদ্মায় ফেলে দিয়েছিল। পরে সেই লাশের কয়েকটি অংশ পাওয়া গেলেও মাথাসহ অনেক অংশই পাওয়া যায়নি। লাশ না পাওয়ায় সে হত্যা মামলারও কোনো গতি হয়নি। ওই হত্যাকান্ডটি তখন দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। যেমন আলোড়ন তুলেছিল ১৯৯৯ সালে লক্ষীপুরের আইনজীবী নূরুল ইসলামের হত্যাকান্ড। তাকেও হত্যার পর দুর্বৃত্তরা লাশ কয়েক টুকরো করে মেঘনায় ভাসিয়ে দিয়েছিল। পরের বছরই ঢাকায় সংঘটিত একটি নৃশংস জোড়া খুনের ঘটনায় দেশবাসী শিউরে উঠেছিল। সূত্রাপুর থানার গেন্ডারিয়ায় সায়েম ও মহসীন নামের দুই যুবককে হত্যার পর হত্যাকারীরা চিহ্ন মুছে ফেলার অভিপ্রায়ে লাশ দুটিকে ১২ টুকরো করে সুয়ারেজ লাইনে ফেলে দিয়েছিল। এসবই মানসিক বিকৃতির দৃষ্টান্ত। লাশ টুকরো করার সেই প্রবণতা এখনো আছে দুর্বৃত্তদের মধ্যে। মাঝেমধ্যেই গণমাধ্যমে সেসব নৃশংসতার খবর আসে।

সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা এখানে তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করছি। ২৫ মে রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় এক যুবকের খন্ডিত মৃতদেহ। পরে জানা যায়, ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুর রহমান প্রতিবেশী যুবক আজহারুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ কয়েক টুকরো করে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন। আজহারের স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম রহমানের অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ওই হত্যাকান্ড। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, হত্যাকান্ড ঘটানোর পর ইমাম ফজরের নামাজে ইমামতিও করেছিলেন। ৩১ মের দৈনিক পত্রিকাগুলোয় রাজধানীর মহাখালীর আমতলীতে একটি ড্রামের মধ্যে এক ব্যক্তির খন্ডিত লাশ উদ্ধারের খবর প্রকাশিত হয়। পরে পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকান্ডের কাহিনি। স্বামী ময়না মিয়ার দ্বিতীয় বিয়ে মানতে না পেরে স্ত্রী ফাতেমা খাতুন খুন করেন তাকে। ধরা পড়ার পরে তিনি পুলিশের কাছে যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তা রীতিমতো পিলে চমকানো। জুসের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে স্বামীকে অচেতন করে তার বুকের ওপর বসে চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। তারপর প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে লাশ কয়েক টুকরো করে তিনটি স্থানে ফেলে দিয়ে আসেন। তৃতীয় ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার। পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী হীরা চৌধুরী ঘুমন্ত দুই শিশু সন্তানের পাশেই গলা কেটে হত্যা করেন স্ত্রী তানজিদা আক্তার পপিকে। উপেরোক্ত ঘটনাগুলোর অপরাধীরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। একটি কথা অবশ্যই স্বীকার্য যে হত্যা, ধর্ষণসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনায় দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব ক্ষেত্রেই দুই দিন আগে বা পড়ে অপরাধীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তার পরও একশ্রেণির মানুষের বোধোদয় হচ্ছে না। এরা অপরাধ করেই যাচ্ছে।

ক্রমাগত এ অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির কারণ কী? সংঘটিত ঘটনাসমূহ পর্যবেক্ষণ করলে প্রতীয়মান হবে যে প্রতিটি ঘটনাই ঘটেছে এক ধরনের মানসিক বিকৃতি বা উন্মাদনা থেকে। একশ্রেণির মানুষের স্বার্থোন্মাদনা তাদের এ ধরনের নৃশংসতায় প্রবৃত্ত হতে প্ররোচিত করছে। এ সম্পর্কে ২১ জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে সামাজিক ও পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য সমাজবিজ্ঞানীরা অযাচিত আকাশ সংস্কৃতি এবং ইন্টারনেটের অপব্যবহারকে দায়ী করেছেন। তারা বলেছেন, যৌথ পরিবারের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা, সামাজিক মূল্যবোধের অভাব এবং নৈতিকতার অবক্ষয় এজন্য অনেকাংশে দায়ী। অনেকেই বিয়েবহিভর্‚ত সম্পর্ককে বেশির ভাগ পারিবারিক কলহের জন্য দায়ী করেছেন। আর এর কারণ হিসেবে তারা ধর্মীয় অনুশাসন থেকে দূরে সরে যাওয়া এবং পারস্পরিক অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ থেকে নিষ্কৃতিলাভের উপায় হিসেবে সমাজবিজ্ঞানীরা অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বর্তমান সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ একটি সুস্থ সমাজের জন্য সহায়ক নয়। এখানে সবাই যেন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্যদিকে নজর দেওয়ার কারও ফুরসত নেই। জানা কথা যে মানুষ যখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে তখন তার সব চিন্তা শুধু আত্মস্বার্থকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। এ স্বার্থপরতা মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে তুলতে পারে। যার ফলে তার দ্বারা যে কোনো নৃশংসতা সংঘটিত হওয়া সম্ভব। নিবন্ধের শুরুতে যে হিন্দি গানটির প্রসঙ্গ টেনেছিলাম, তাতে মানুষের এই বদলে যাওয়া নিয়ে আফসোস করা হয়েছে। সে আফসোস এখনো রয়েছে। ৬৭ বছর আগে যে সামাজিক পরিস্থিতি উপজীব্য করে গানটি রচিত হয়েছিল, সে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং তার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। মানুষের যদি চৈতন্যোদয় না হয়, বিবেক ও মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত না হয়, পাশাপাশি মানুষকে সুশৃঙ্খল করার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হয় তাহলে অবস্থার কোনো উন্নতির আশা করা যায় না। সমাজ ও রাষ্ট্রের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিষয়টি নিয়ে তাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর