শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মুসা খান

মুসা খান মসনদ-ই-আলা  ভাটি অঞ্চলের অধিপতি। তিনি ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে পিতা  ঈসা খান মসনদ-ই-আলার মৃত্যুর পর সোনারগাঁয়ের মসনদে অধিষ্ঠিত হন। পিতার থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে তিনি লাভ করেন এক বিশাল রাজ্য। এ রাজ্য বর্তমান বৃহত্তর ঢাকা ও কুমিল্লা জেলার প্রায় অর্ধেক, প্রায় গোটা বৃহত্তর ময়মনসিংহ এবং সম্ভবত বৃহত্তর রংপুর, বগুড়া ও পাবনার অংশবিশেষ জুড়ে বিস্তৃত ছিল। তিনি মুঘল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁর পিতার অবিরাম প্রতিরোধ ও সংঘর্ষের নীতি অব্যাহত রাখেন এবং ভাটি অঞ্চলে স্বীয় আধিপত্য অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সংগ্রাম পরিচালনা করেন। মুঘল আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য ঈসা খান প্রতিবেশী ভূঁইয়াদের (জমিদার) সমন্বয়ে একটি ঐক্যজোট গড়ে তুললেও তাঁর সামরিক শক্তির প্রধান উৎস ছিল বিদ্রোহী আফগান দলপতিদের সমন্বয়ে গঠিত মুঘলবিরোধী মৈত্রী জোট। কিন্তু বাংলায় আফগান সংহতির অবক্ষয় ও আফগান শক্তির ক্রমাবনতির নিরিখে মুসা খানকে তাঁর কৌশল পরিবর্তন করতে হয়। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে বাংলার ভূঁইয়াদের সংগঠিত করে একটি ঐক্য জোট গড়ে তোলেন এবং সম্ভবত তাদের মধ্যে সৃষ্টি করেন আঞ্চলিক ঐক্যের অনুভূতি। এই করে তিনি বাংলার শাসকবর্গের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও ঘনিষ্ঠ ঐক্যের সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হন। মুসা খানের সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ ভূঁইয়ারা সাধারণ্যে বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত হলেও বস্তুত ভূঁইয়ার সংখ্যা ছিল আরও বেশি। মুসা খানের ছিল শক্তিশালী বিশাল নৌবহর, আর তাঁর মৈত্রী জোটের ভূঁইয়াদের সম্মিলিত নৌবহর নিয়ে তিনি প্রায় এক দশক নদীমাতৃক ভাটি অঞ্চলে মুঘল আগ্রাসন প্রতিহত করেন। মুসা খানের রাজনৈতিক কর্তৃত্বের কেন্দ্রস্থল ছিল বর্তমান ঢাকার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পদ্মা, শীতলক্ষ্যা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার সংগমস্থলে সামরিক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর