মিয়ানমার থেকে আসা মাদক ইয়াবা শুধু বাংলাদেশের তরুণদেরই গ্রাস করছে না, প্রবাসীদের জন্যও সৃষ্টি করছে বিড়ম্বনা। প্রতিবেশী এ দেশটি থেকে বাংলাদেশে আসা ইয়াবার একটি অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে। সেসব দেশে একশ্রেণির প্রবাসী বাঙালি ও বার্মিজ নামে পরিচিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়েছে ইয়াবাবাজার। সৌদিতে বাঙালি অধ্যুষিত প্রায় প্রতিটি শহরেই চলছে ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য। সেখানে একাধিক সিন্ডিকেটের আওতায় মাদক সিন্ডিকেটের বিপুলসংখ্যক সদস্য রাতদিন মাদকসেবীদের কাছে ইয়াবা পৌঁছানোর কাজে ব্যস্ত থাকছে। সৌদিতে মাদক সিন্ডিকেটের তৎপরতায় সে দেশে অবস্থানরত বাঙালির মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ ইসলামী রীতিনীতি প্রাধান্য দিয়েই সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান পরিচালিত। সে দেশে মাদক কেনাবেচা, বহন ও মাদক আখড়া গড়ে তোলার বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে এবং মাদক মামলায় সৌদিতে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে। তা ছাড়া মাদকবাজার গড়ে তোলার পেছনে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ উত্থাপিত হলে তা হাজার হাজার প্রবাসীর কর্মসংস্থানকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন প্রবাসীরা। মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার। বিশ্বমন্দার কারণে এ শ্রমবাজার তার বর্ধিষ্ণু অবস্থা হারিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নিজেদের লোকজনকে নিয়োগ করা যায় এমন সব ক্ষেত্রে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে রক্ষণশীল মনোভাব দেখাচ্ছে। জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়া এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সে দেশে অবস্থান বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে প্রশাসনের মধ্যে। ইয়াবার মতো মাদক পাচারে বাংলাদেশিরা জড়িত এমনটি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো বাজে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিপদ এড়াতে মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রতিটি ফ্লাইটের ওপর কঠোর নজরদারি থাকা প্রয়োজন। ইয়াবার কোনো চালান ধরা পড়লে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।