রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

কঠোর লকডাউন

সমন্বয়হীনতার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আগামীকাল সোমবার থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন নিশ্চিতে পুলিশ-বিজিবি কাজ করবে এবং সেনাবাহিনীও নামানো হবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস লকডাউনে বন্ধ থাকবে। চলাচল বন্ধ থাকবে জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের যানবাহন। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম এর আওতার বাইরে থাকবে। সারা দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২৪ জুন কভিড-১৯ কারিগরি পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে দেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’-এর সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, দেশে কভিড-১৯-এর ভারতীয় ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে এবং এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণক্ষমতা অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশে ৫০টির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। অন্যসব দেশের অভিজ্ঞতা হলো, কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ সম্ভব নয়। লকডাউন মহামারী নিয়ন্ত্রণের একটি পরীক্ষিত কৌশল এবং এটি অন্তত ২ হাজার বছর ধরে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত। করোনা সংক্রমণের যে অবস্থা তাতে কঠোর লকডাউনের বিকল্প নেই। তার পরও আমরা বলব কঠোর লকডাউন মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে যেহেতু গভীর সংকট সৃষ্টি করবে সেহেতু অনাকাক্সিক্ষত সিদ্ধান্ত এড়াতে আগেভাগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াই ছিল বাঞ্ছনীয়। আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি মহামারী ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া। মাস্ক ছাড়া কেউ যাতে ঘরের বাইরে বেরোতে না পারে নিশ্চিত করা। কেউ মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোলে আর্থিক জরিমানা এমনকি জেলে ভরার মতো কঠোর ব্যবস্থা জারি করাই উচিত ছিল। আমরা আশা করব ‘কঠোর লকডাউন’ যাতে প্রতিপালিত হয় তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে। সমন্বয়হীনতার কারণে যাতে লকডাউন জারির উদ্দেশ্য ব্যর্থ না হয় সে ব্যাপারে কঠোর হওয়া জরুরি। কিছু লোকের কান্ডজ্ঞানহীন আচরণে পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কোনোভাবে বাঞ্ছনীয় নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর