মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

জীবিকার কথা ভাবুন

লকডাউন নয় মাস্ক পরা নিশ্চিত করুন

মাথাব্যথা নিরাময়ের জন্য ওষুধ লাগে, মাথা কেটে ফেলা কোনো সমাধান নয়। তেমন মহামারীকালে বিপর্যয় এড়ানোর প্রকৃষ্টতম পথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহার। করোনাভাইরাসের উদ্ভব ঘটেছিল চীনে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা থাকায় সে দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে খুব সহজেই। পাশের দেশ ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া একই সাফল্য দেখিয়েছে যথেচ্ছতাকে সামাল দিয়ে। বাংলাদেশে বারবার লকডাউন ঘোষণা করে দেশের অর্থনীতিকে ইতিমধ্যেই বিপদাপন্ন করে তোলা হয়েছে। একের পর এক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার সৌভাগ্যধারী সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা ছাড়া আর সবার জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে। ঘোষিত লকডাউন তাদের জীবন-জীবিকাকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে। ঈদের আগে আকস্মিক লকডাউনে উৎকণ্ঠায় পড়েছেন ছোট বড় সব ব্যবসায়ীা। শ্রমজীবী ও পেশাজীবীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেতন ও বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবীরা। দুশ্চিন্তায় পড়েছে তৈরি পোশাকসহ দেশের সব রপ্তানি খাত। একদিকে অর্ডার বাতিলের শঙ্কা, অন্যদিকে সময়মতো শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধের চাপ ত্রিশঙ্কু অবস্থার উদ্ভব ঘটিয়েছে। ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও শ্রমজীবীদের আশঙ্কা, সমন্বয়হীন এ লকডাউন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল করে ফেলবে। বাড়ি ফেরার হুড়োহুড়িতে যেমন সংক্রমণ বাড়বে তেমনি ঈদের আগে সবকিছু বন্ধ থাকলে তৈরি হবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা। ব্যাংক ও সেবা খাত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী বিবেচিত হবে। যে কোনো মূল্যেই রাজস্ব আদায়ের খাতগুলো খুলে রাখতে হবে। লকডাউন না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত হলে তাতে বেশি সুফল পাওয়া যেত। সরকার স্বাস্থ্যবিধি পালন অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরার নির্দেশনা দিয়ে কুম্ভকর্ণের ঘুমে নিমগ্ন থাকায় আত্মঘাতী সর্বাত্মক লকডাউনের কথা ভাবতে হচ্ছে। বিপর্যয় না চাইলে নিজেদের ভুল শুধরে স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের ওপর আঘাত হানার বিধান রেখে সবকিছু চালু রাখার কথাই ভাবা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর