বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জন্মশতবার্ষিকীতে অভিনন্দন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মশতবার্ষিকী আজ। ১৯২১ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে অভিধা পাওয়া এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পূর্ববঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে ১৯০৫ সালে অখন্ড বাংলা ভেঙে গঠিত হয় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে ভারতীয় জাতীয়তাবাদীরা। তারা বঙ্গভঙ্গকে ঔপনিবেশিক শক্তির ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করে। তুমুল আন্দোলনের মুখে রোধ হয়ে যায় বঙ্গভঙ্গ। এ প্রেক্ষাপটে পূর্ববঙ্গের মানুষকে সান্ত্বনা দিতে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এর মাত্র তিন দিন আগে ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদন জানান ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং অন্য নেতৃবৃন্দ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ শুরুতেই প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ১৯১৭ সালের মার্চে ইমপেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্‌বান জানান। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইন বাস্তবায়নের ফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা করে। এই ৮৪৭ জনের মধ্যে নারী ছিলেন মাত্র একজন। সে সময়ের ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমন্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশের পরিত্যক্ত ভবনাদি ও ঢাকা কলেজের বর্তমান কার্জন হল ইত্যাদি ভবন নিয়ে গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পায় শুরু থেকেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা মহান ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মেধা ও মননশীলতা দিয়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রী। বাঙালির মুক্ত বিবেকের বাতিঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর