রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বন্যার পদধ্বনি

পরিস্থিতি মোকাবিলার উদ্যোগ নিন

বর্ষা মৌসুমের অনুষঙ্গ হিসেবে দেশের নদ-নদীতে পানি বাড়া শুরু হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। শুকনো মৌসুমে যে নদী অস্তিত্বের সংকটে ভুগছিল তার ভাঙনে ভাঙছে একের পর এক ঘরবাড়ি। দেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তার পাশাপাশি ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বেড়ে চলেছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে চলতি সপ্তাহে এ দুই নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এমনটিই আশঙ্কা। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে; যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার চরাঞ্চল ও নদী-তীরবর্তী নিম্ন এলাকাগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। জেলার সদর, চৌহালী, শাহজাদপুর ও কাজিপুরের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙনও দেখা দিয়েছে। প্রবল বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীতে বেড়েছে নদ-নদীর পানি। মুহুরী নদীর একটি স্থানে বাঁধ ভাঙার পর শুক্রবার রাতে পরশুরামে কহুয়া নদীর একটিসহ আরও দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরামের কমপক্ষে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের।  ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। তিন দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী শহর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া, হালুয়াঘাটে পাহাড়ি ঢলের চাপে নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে ভেসে গেছে হাজারো পুকুরের মাছ। বাংলাদেশ নদ-নদীর দেশ। অতিবর্ষণ ও বন্যা এ দেশের সাংবৎসরিক সঙ্গী। নদ-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বন্যার ছোবল অনিবার্য হয়ে উঠছে। নদ-নদী খনন, ফসল ও জনপদ রক্ষায় বাঁধ তৈরি করে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতিও নেওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর