শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদায় দিলীপ কুমার

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি

ভারতীয় উপমহাদেশের চলচ্চিত্রজগতের কিংবদন্তি দিলীপ কুমার চলে গেছেন না-ফেরার দেশে। বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের পিডি হিন্দুজা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চলচ্চিত্রের এই মহিরুহ। ভারত ও সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ৯৮ বছর বয়সে। রেখে গেছেন স্ত্রী একসময়ের সাড়াজাগানো অভিনেত্রী সায়রা বানুসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করেছেন। একইভাবে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানেও দিলীপ কুমারের মৃত্যু সৃষ্টি করেছে শোকের আবহ। দিলীপ কুমারের পিতৃপ্রদত্ত নাম ইউসুফ সারোয়ার খান। ব্রিটিশ শাসনামলে তাঁর জন্ম পেশোয়ার শহরে, বর্তমান পাকিস্তানের পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। তাঁর বাবা মোহাম্মদ সারোয়ার খান ছিলেন একজন ফল ব্যবসায়ী। কৈশোরে বাবার সঙ্গে তিনি মুম্বাই আসেন। পরে পুণে গিয়ে ব্রিটিশ সেনাদের জন্য পরিচালিত ক্যান্টিনে কাজ নেন। এর কিছুদিন পর আবারও মুম্বাইয়ে ফিরে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় যোগ দেন। ব্যবসার কাজেই একসময় ইউসুফ খানের পরিচয় হয় সে সময়কার প্রখ্যাত সাইকোলজিস্ট ডা. মাসানির সঙ্গে। তিনি ইউসুফকে পরিচয় করিয়ে দেন ‘বোম্বে টকিজ’-এর মালিকের সঙ্গে। ১৯৪৩ সালে ইউসুফ খান বোম্বে টকিজে যান চাকরির জন্য। বোম্বে টকিজের মালিক তাঁকে অভিনেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন। ১৯৪৪ সালে প্রথম চলচ্চিত্র ‘জোয়ার ভাটা’ থেকেই ইউসুফ খানের দিলীপ কুমার হয়ে ওঠা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা গোটা উপমহাদেশে কিংবদন্তি হিসেবেই সমুজ্জ্বল ছিলেন তিনি। দিলীপ কুমার অভিনীত মুঘল-ই-আজম, গঙ্গা যমুনা, রাম আওর শ্যামসহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি দর্শকের হৃদয়রাজ্যে ঠাঁই পেয়েছে। ট্র্যাজেডি কিং হিসেবে অভিহিত দিলীপ কুমার তাঁর অসামান্য জনপ্রিয়তার জন্য মুম্বাই মহানগরীর শেরিফ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। হিন্দি সিনেমা জগতের সবচেয়ে মর্যাদাবান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারেও অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। পেয়েছেন পদ্মবিভূষণ রাষ্ট্রীয় পদক। বাংলাদেশেও অসামান্য জনপ্রিয় ছিলেন তিনি- বিশেষত প্রবীণজনদের মাঝে। কিংবদন্তি এই অভিনেতার প্রতি আমাদের শেষ শ্রদ্ধা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর