শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

আল্লাহকে চেনা ও জানা

মো. আমিনুল ইসলাম

আল্লাহকে চেনা ও জানা

আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছি শুধু আমার ইবাদতের জন্য।’ সুরা জারিয়াত, আয়াত ৫৬। যে আল্লাহ আমাদের ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন তাঁর বিধান মোতাবেক আমরা কতটুকু তাঁর ইবাদত করছি বা করলেও তার কতটুকুই বা সঠিক করছি? আমাদের জন্য তিনি কতটুকুই দয়াময় আমরা কি তা কখনো চিন্তা করেছি। সুরা আল হাশরের আয়াত ২২-২৪-এ বর্ণিত হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী। তিনি দয়াময়, তিনি পরম করুণাময়। তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই, তিনি মালিক, তিনি পূতপবিত্র, শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, রক্ষক, পরাক্রমশালী, প্রবল মাহাত্ম্যের অধিকারী, আল্লাহ পবিত্র ওইসব থেকে তারা যাদের তাঁর সঙ্গে শরিক করে। তিনিই আল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা, তিনিই সৃষ্টির উদ্ভাবক ও রূপদাতা, তাঁর জন্য রয়েছে উত্তম নামসমূহ, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’

এ আয়াতগুলো থেকে পরিষ্কার বোঝা গেল আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে সৃষ্টির সব অজানা ও জানা, যা কিছু আছে সবই তাঁর জ্ঞাত, তিনি পরম দয়ালু ও দাতা। তিনি এমন এক সত্তা যার রহমত অসীম ও অফুরন্ত। এবং সব উত্তম নামসমূহের তিনিই একমাত্র অধিকারী। সুরা আল মুমিনের ৬৪ নম্বর আয়াতে আরও বিবৃত হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা তোমাদের জন্য জমিনকে বাসোপযোগী করে বানিয়ে দিয়েছেন, আসমানকে বানিয়েছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদের আকৃতি দিয়েছেন, এরপর তোমাদের আকৃতিকে করেছেন সুন্দর এবং তোমাদের রিজিক দান করেছেন পবিত্র বস্তু থেকে। এই হচ্ছেন আল্লাহতায়ালা, তিনি তোমাদের রব। কত মহান সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহতায়ালা।’ ‘তিনিই জীবন দান করেন, মৃত্যু ঘটান এবং যখন তিনি কিছু করা স্থির করেন তখন তিনি তার জন্য বলেন ‘হও’ ফলে তা হয়ে যায়। সুরা আল মুমিন, আয়াত ৬৮। প্রতিদিন আমরা জেনে না জেনে কত গুনাহ করছি। এসব গুনাহ থেকে ক্ষমা করে দেওয়ার মালিক শুধুই তিনি। সুতরাং আমাদের জন্য তিনি দয়াময় ও দয়ালু। আমাদের সবার উচিত আমাদের প্রতিদিনের অন্যায় কাজের জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া ও তওবা করা। তিনি আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। কারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল। আল্লাহ অপছন্দ করেন তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করা। সুরা আল নিসায় বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা এ বিষয়টিকে কখনই ক্ষমা করবেন না যে তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করা হবে।’ আয়াত ১১৬। সুরা আল নিসায় আরও বিবৃত হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা কারও ওপর এক বিন্দুও জুলুম করেন না, বরং তিনি এত দয়ালু যে নেকির কাজ যদি একটি হয় তবে তিনি তার পরিমাণ দ্বিগুণ করে দেন এবং এর সঙ্গে তিনি নিজ থেকেও বড় পুরস্কার দান করেন।’ আয়াত ৪০। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ যে আমাদের প্রতি কত দয়াময় তা এ আয়াত থেকে আরও বেশি করে প্রকাশ হলো। সুতরাং আমাদের সবার উচিত তাঁর বান্দা হিসেবে তাঁর বিধান মেনে চলা। তা না হলে তিনি যেমন দয়াময় তেমনি তিনি কঠোরও। সুরা ফাতিরে আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহ মানুষের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করলে ভূপৃষ্ঠের কোনো প্রাণীকেই তিনি রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের অবকাশ দেন। এরপর যখন তাদের জন্য সেই নির্দিষ্ট সময় এসে যাবে তখন তো আল্লাহ তাদের পাকড়াও করবেন। আল্লাহতায়ালা তাঁর বান্দাদের যাবতীয় কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করেন।’ আয়াত ৪৫। সুতরাং আমাদের জেনে রাখা উচিত আল্লাহ যেমন দয়ালু তেমনি তিনি তাঁর বান্দার অবাধ্যতার জন্য শাস্তিদানেও কঠোর।

আল্লাহ রব্বুল আলামিন যেন আমাদের তাঁর বাণী কোরআনের বিধান মেনে চলার তৌফিক দান করেন এবং তাঁর দয়ায় আমাদের সিক্ত করেন সেই প্রার্থনা করি।

 

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর