সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

কারখানা নয় জেলখানা

প্রাণহানির দায় যাদের তাদের শাস্তি হোক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পাকিস্তানের সেজান ব্র্যান্ডের জুস তৈরি হতো সজীব গ্রুপের হাসেম ফুড লিমিটেড নামের যে কারখানায় সেটি ছিল একটি জেলখানা। কারখানার শ্রমিকদের প্রায় শতভাগ ছিল শিশু। ১০-১১ বছরের শিশুদের দিয়েও স্বল্প বেতনে কাজ করানো হতো ওই কারখানায়। বৃহস্পতিবারের অগ্নিকান্ডে কারখানার শতাধিক শ্রমিক মারা গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি তো কারখানাটিতে ছিলই না তার ওপর আগুন লাগার পরও কারখানার গেট বন্ধ রাখা হয়। ইতিমধ্যে গণহত্যাসম এই শ্রমিক হত্যাকান্ডে জড়িতদের জবাবদিহিতায় আনতে প্রশাসন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেমসহ আটজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আশ্বস্ত করেছেন, দোষীদের বিচার হবে, ইতিমধ্যে আটজনকে আটক করাও হয়েছে। আগুনের ঘটনায় গাফিলতি থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আনীত এজাহারের অভিযোগে বলা হয়েছে হাসেম গ্রুপের ওই ছয় তলা ভবনের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত সিঁড়ির ব্যবস্থা ছিল না। মাত্র চারটি সিঁড়ি প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের জন্য কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়। এর বাইরে ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়ি রাখা হয়নি। কলকারখানার অভ্যন্তরে ছিল না পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আগুন লাগার পরও ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরের গেট বন্ধ রাখা হয়। এর ফলে আটকে পড়ে অসহায়ভাবে শ্রমিকদের নির্মম মৃত্যু হয়। রূপগঞ্জের কারখানায় অগ্নিকান্ডে বিপুল প্রাণহানির দায় প্রধানত কারখানা কর্তৃপক্ষের। তবে শিল্পকলকারখানা পরিদর্শনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের দায় কোনো অংশে কম নয়। শত শত শিশু শ্রমিকসহ প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর অস্তিত্ব বজায় রাখলেও কোনো কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েনি এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকারি কর্মচারী নামের শ্বেতহস্তী পোষার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রূপগঞ্জের অগ্নিকান্ডের ঘটনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর