ঈদুল আজহার আগে ১৫ থেকে ২২ জুলাই এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে ২৩ জুলাই থেকে ফের বহাল হবে কঠোর বিধিনিষেধ। দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়া সত্ত্বেও লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রধানত সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার দিক লক্ষ্য রেখে। ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে এ সময়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে গণপরিবহন, শপিং মল, দোকানপাট। ১৫ জুলাই থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল। কোরবানির ঈদে মানুষের চলাচল ও পশুর হাটে কেনাবেচা বিবেচনায় লকডাউন শিথিল করা হলেও এ সময়ে সরকারি অফিস খোলা থাকবে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। বন্ধ থাকবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ১৭ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত পাঁচ দিন রাজধানী ঢাকায় কোরবানির পশুর হাট বসবে। ইজারাদাররা পশু বিক্রি শুরুর দুই দিন আগে হাটগুলোয় প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাবেন। দুই সিটি করপোরেশন ইজারা দিয়েছে ১৯টি অস্থায়ী হাট। দেশের সাধারণ মানুষের ধর্মীয় আবেগ এবং জীবন-জীবিকার স্বার্থে লকডাউন প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণের সুযোগ কম। আমাদের দেশের বাস্তবতায় লকডাউন দিয়ে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্ন রয়েছে। আমরা বারবার এ কলামে লকডাউনের পরিবর্তে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে সব কিছু চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছি। কারণ লকডাউনভিত্তিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা অকার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মানার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলে ঈদের আগে এক সপ্তাহ লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হওয়ারও আশঙ্কা সৃষ্টি করবে। তার বদলে লকডাউন প্রত্যাহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কঠোর হলে করোনা সংক্রমণ অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। একই সঙ্গে টিকা প্রদানেও গতি সৃষ্টি করতে হবে জরুরিভাবে।