সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ত্যাগের উৎসব

মো. আবু তালহা তারীফ

ঈদুল আজহা ত্যাগের উৎসব। অনাবিল আনন্দের উৎসব। ঈদুল আজহা মুমিনের অন্তরে অসীম প্রেরণার জন্ম দেয়। আমাদের দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে অন্যতম এটি। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আসেন তখন দেখেন সেখানকার লোকেরা বছরে দুই দিন আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। তারা খেলাধুলা করে। তিনি বললেন, আল্লাহতায়ালা তোমাদের এ দুই দিনের পরিবর্তে আরও অধিক উত্তম ও কল্যাণকর দুটি দিন দিয়েছেন। ১. ঈদুল ফিতর ২. ঈদুল আজহা। আবু দাউদ।

ঈদুল আজহার দিনে সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় নির্দিষ্ট পশু কোরবানি করবে? পশু কোরবানির সঙ্গে অন্তর থেকে হিংসা বিদ্বেষকে জবেহ করে নিজ অন্তরকে পরিশুদ্ধ করবে। প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা কোরবানি করবে না তাদের ব্যাপারে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হুঁশিয়ারি করেছেন। ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে-কাছেও না আসে।’ ইবনে মাজাহ।

ঈদুল আজহার দিনে নিয়তকে পরিশুদ্ধ করে কোরবানি করা জরুরি। পশু জবেহর সময় আনন্দ উল্লাসে মেতে থেকে কোরবানি নয়। নিজের অন্তরকে বিলিয়ে দেওয়াই কোরবানি। পশু জবেহ দেওয়ার সময় সেলফি তোলা, ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা মোটেও ঠিক নয়। কোরবানির গোশত খাওয়ার নিয়ত করলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। ভালো গোশত নিজে ফ্রি জে রেখে চর্বিযুক্ত গোশত অন্যদের দেওয়া কোরবানি নয়। কোরবানি দিতে পারেনি এলাকার প্রতিবেশী, গরিব অসহায়দের বাড়িতে নিজ হাতে গোশত বণ্টন করা উত্তম। যে এলাকায় জনসংখ্যা বেশি সেখানে নিজের অংশ থেকে দেওয়া সওয়াবের কাজ। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আমাকে সামর্থ্য দিয়েছেন বিধায় কোরবানি দিতে পেরেছি। কিন্তু অনেকেই দিতে পারেননি। আমার পক্ষে গোশত ক্রয় করে খাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। অসহায় গরিবদের কিনে খাওয়ার ক্ষমতা খুবই কম। বছরে একটিমাত্র দিনেই তিনি আমার বাড়ির দরজায় এসেছেন। তাদের তাড়িয়ে দেওয়া মোটেই ঠিক হবে না। তাদের দেওয়া সওয়াবের কাজ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা খাও এবং অভাবগ্রস্ত দরিদ্র লোকদের খাওয়াও।’ সুরা হজ, আয়াত : ২৮।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর