মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

পবিত্র ঈদুল আজহা

হানাহানিমুক্ত বিশ্ব গড়ে উঠুক

মুসলমানদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি পবিত্র ঈদুল আজহা। এ ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। ইমানদারদের আদি পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পবিত্র স্মৃতি জড়িত কোরবানি প্রথার সঙ্গে। ঈদুল আজহা এমন এক উৎসব ও ইবাদত যা সংঘাতময় বিশ্বে মানব জাতিকে শান্তির পথ দেখাতে পারে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী হাজার হাজার বছর আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে তাঁর প্রিয় বস্তু কোরবানির নির্দেশ দেন। আল্লাহর প্রতি সংশয়াতীত আনুগত্যে হজরত ইবরাহিম (আ.) প্রিয় ছেলে ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন। ঐশীনির্দেশ পালনে আপত্যস্নেহ যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে নিজের চোখ বেঁধে প্রিয় ছেলেকে কোরবানির সময় আল্লাহর ইচ্ছায় ইসমাইল (আ.)-এর বদলে একটি মেষ বা দুম্বা কোরবানি হয়। ফেরেশতা হজরত ইবরাহিমকে জানান, আল্লাহ তাঁর আনুগত্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যের এ মহিমান্বিত ঘটনার অনুসরণে মহানবী (সা.)-এর অনুসারীদের মধ্যে ১৪০০ বছর ধরে পালিত হচ্ছে কোরবানির প্রথা। কোরবানি নিছক পশু জবাই নয়; মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকে যে পশুত্ব ও অহংবোধ তা বিসর্জন দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হওয়াই কোরবানির শিক্ষা। এ বিষয়ে আল্লাহর ঘোষণা- পশুর রক্ত বা মাংস নয়, তাঁর কাছে পৌঁছে বান্দার তাকওয়া। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের উৎস মহান আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী জীবন গড়ার মধ্যেই রয়েছে কোরবানির মাহাত্ম্য। তা উপেক্ষা করে কোরবানির নামে অহংবোধের কোনো সুযোগ নেই। সারা দেশে এখন চলছে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি। কোরবানিতে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কোরবানি-সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুসলমানের পাশাপাশি খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছেও হজরত ইবরাহিম পরম শ্রদ্ধার পাত্র। হানাহানিমুক্ত বিশ্ব গড়তে মিল্লাতে ইবরাহিম (আ.)-এর মধ্যে শান্তি ও সমঝোতার পরিবেশ গড়ে উঠলে তা হবে মানব জাতির জন্য এক বড় অর্জন। সবাইকে ঈদ মুবারক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর